রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মধ্যরাত পার হলেও তাদের কেউই তখনো ঘুমাননি। আশরাফুলের ব্যাখ্যা- ‘যেই ঠাণ্ডা, এর মইধ্যে আবার ঘুম!’
হকারির আয় দিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কোনোমতে রেলস্টেশনের পাশে বাস করছেন জানিয়ে আশরাফুল বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে কাজে যাইতে পারি না।
সংসারে নতুন অতিথি আসায় যতোটা খুশি হওয়ার কথা, তার চেয়ে বেশি চিন্তিত ছিন্নমূল পরিবারটি। আদরের ছোট্ট শিশুটিকে শীতের হাত থেকে বাঁচাতে পর্যাপ্ত কাপড়ে মুড়িয়ে দিয়েছেন।
আশরাফুল বলেন, ‘এতো ঠাণ্ডার মইধ্যে নিজেরাই ঠিক থাকতে পারি না। আর এই ছোট বাচ্চা কেমনে ঠিক থাকবো? তার যেন ঠাণ্ডা না লাগে, সেজন্য কাপড় দিয়া মুড়াইয়া সামনে আগুন জ্বালাইয়া বইসা আছি’।
তিনি জানান, শীতের সময় সাধারণত তাদের রাতের বেলা ঘুমানো হয় না। দিনের অপেক্ষায় কোনোমতে রাত কাটে।
রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে জড়োসড়ো হয়ে বসে বসেই ঘুমানোর চেষ্টা করছিলেন ময়মনসিংহের বাসিন্দা রিকশাচালক আলাল। দিনে রিকশা চালিয়ে রাতে স্টেশনে থাকেন তিনি।
শীতে ঘুম আসছে না জানিয়ে আলাল বলেন, ‘এইবার এহনই এতো শীত পড়ছে, সামনে যে আরো কত দুর্গতি আছে, আল্লায় জানে! ঠাণ্ডা পড়লে খোলা জায়গায় থাহন যায় না’।
শীতের শুরুতেই এবার বেশ জোরেসোরেই কাঁপন লেগেছে। রাত হলে নগরীর বুকেও সেই হিমবাহের তীব্রতা স্পষ্ট। আর শীত যেন নগরীর ভাসমান-ছিন্নমূল মানুষের কাছে দুর্ভোগেরই আরেক নাম।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
পিএম/এএসআর