ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা চান ‘হয়রানির শিকার’ হেলেন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা চান ‘হয়রানির শিকার’ হেলেন সংবাদ সম্মেলন করছেন হেলেন। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানীর ভাষানটেকের বাসিন্দা এক নারী অভিযোগ করেছেন, থানা এলাকায় মাদকবিরোধী র‌্যালিতে অংশ না নেওয়ায় এবং মাদক ব্যবসায় রাজি না হওয়ায় তার পরিবারের লোকজনকে একাধিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে পুলিশ। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহাপুলিশ পরিদর্শকের (আইজিপি) জরুরি হস্তক্ষেপও দাবি করেছেন তিনি।
 
 

সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ ও সহায়তা কামনা করেন হেলেন নামে ওই নারী।

তিনি অভিযোগের ফিরিস্তি তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভাষানটেকে মাদকের দৌরাত্ম্যের কথা থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) মুন্সী সাব্বির আহমেদকে জানিয়ে এর বিরুদ্ধে অভিযানের অনুরোধ জানাই।

এজন্য মাদক ব্যবসায়ীরা আমার ওপর হামলা চালিয়ে মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপায়। কিন্তু গত ১১ মার্চ পুলিশ আমার ছেলে হামিদুর রহমান রাজুকে আটক করে। কারণ জানতে চাইলে এসআই (উপ-পরিদর্শক) আসিফ, এসআই মোখলেস, এসআই কামরুল, এসআই সোহেল ও এসআই ফারুক জোর করে আমাকেও গাড়িতে তোলেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করেন। ’

হেলেন বলেন, ‘ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ছেলের কাছ থেকে ৩৭৬ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার দেখিয়ে তাকে কোর্টে চালান করে (ভাষানটেক থানার মামলা নং-১০৩/০৩/২০১৭ইং) দেওয়া হয়। বিনাদোষে তিন মাস কারাভোগ করে ছেলে জামিনে বের হয়। ’
 
‘গত ১০ নভেম্বর আমার কিশোর ছেলে রাজনকে বিনাদোষে ধরে নিয়ে তার বিরুদ্ধে ভুয়া মাদক মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় (ভাষানটেক থানার মামলা নং- ১০,/১০/১১/২০১৭ ইং)। ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, ‘তুমিও পুলিশকে টাকা দিয়ে মাদক ব্যবসা করো, না হয় এলাকা ছেড়ে চলে যাও, ডিস্টার্ব করো না’। ’
 
হেলেন আরও বলেন, ‘এসব হয়রানির প্রেক্ষিতে গত ১৯ নভেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বিস্তারিত জানাই। তখন সাধারণ সম্পাদক একজন সাংবাদিককে ওসির সঙ্গে কথা বলতে বলেন। ওই সাংবাদিক ওসিকে ফোন দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরুল ইসলাম শিকদারের নেতৃত্বে এসআই মাহাবুব, এসআই কবীর, এসআই রবিউলসহ কয়েকজন বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্র ভাঙচুর, ছেলেকে মারধর এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে ও স্বামী বাচ্চুকে ধরে নিয়ে যায়। পরে জানা যায়, বাচ্চুর কাছ থেকে ২ হাজার ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার ও আমাকে পলাতক দেখিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে কোর্টে পাঠায়। এরই মধ্যে স্বামীর জামিনের জন্য কোর্টে গেলে সেখানে এসআই মাহবুব আমাকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চালান। ’

‘এরই মধ্যে ওসি ফোনে হুমকি দেন, ‘জানতে পারলাম তুই নাকি সাংবাদিক সম্মেলন করবি? যদি করো আর সাংবাদিকদের ঘটনা জানাও, তাহলে তোর দুই ছেলেসহ সবার কপালে দুঃখ আছে’। ’ 

স্থানীয় ‘মাদক সম্রাট’ কালা বাবুল, জুয়েল, হাসনা, রুবেল, ইমু, মাহমুদা, আলোচিত মাদক ব্যবসায়ী নিকিতার সহযোগী কাশেম ও শাহিদা, আফরোজা, রেহেনি, রফিক ওরফে পাইটু, রায়হান, রনজু ও হেনা যে কোনো সময় তার পরিবারের ক্ষতি করতে পারে বা মাদকসহ পুলিশে ধরিয়ে দিতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানান হেলেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
এমএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।