গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মঠবাড়িয়া উপজেলার খেজুরবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়মাছুয়া গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে সিরাজ (২৫) ও একই এলাকার দেলোয়ার আকনের ছেলে হাফিজ (১৪)।
ঘটনার ১৩ দিন পর তথ্যপ্রযুক্তিসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তিন আসামির মধ্যে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পলাতক অন্য আসামি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মালিয়া গ্রামের আ. রব হাওলাদারের ছেলে নাজমুল ইসলাম নয়ম ওরফে সমীরকে (৩০) গ্রেফতারে অভিযান চলমান রেখেছে পুলিশ।
ঘটনার ১৫ দিন পরে সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) বিকেলে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল্লাহ মো. নাসের জানান, গত ১৯ নভেম্বর বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব হেলথ্ অ্যান্ড টেকনোলজির প্যাথলজি বিভাগের ছাত্রী ও বরিশাল নগরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ডেফুলিয়া এলাকার আলমগীর খানের মেয়ে সাদিয়া আক্তার নিখোঁজ হন।
মামা জালাল হাওলাদারের নগরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে সাদিয়া নিখোঁজ হলে সম্ভাব্য সকল স্থান ও মাধ্যমে খোজ-খবর নিয়েও তার সন্ধান পাননি বাবা আলমগীর খান। পরে গত ২২ নভেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
পুলিশ তদন্তে নেমে তথ্য পেলে নিখোঁজ সাদিয়ার বাবা আলমগীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গত শনিবার (০২ ডিসেম্বর) মামলা দায়ের করেন। মামলায় গ্রেফতারকৃত সিরাজসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামি করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বলেন, ওই মামলার সূত্র ধরে শনিবারই তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় সিরাজকে ও পরদিন রোববার (০৩ ডিসেম্বর) হাফিজকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, সিরাজ প্রেমের অভিনয় করে বরিশাল নগরের রুপাতলী থেকে ১৯ নভেম্বরই পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া বাজারে নিয়ে যান সাদিয়াকে।
সেখানে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে গ্রেফতারকৃত সিরাজ, হাফিজ ও পলাতক সমীর সাদিয়াকে বড়মাছুয়া গ্রামের বটতলা এলাকায় নিয়ে যান। পরে সেখানকার একটি রাস্তার পাশে বলেশ্বর নদীর তীরে নিয়ে সাদিয়াকে তিনজনে মিলে ধর্ষণ করে।
এ সময় সাদিয়া চিৎকার করলে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে সাদিয়ার মরদেহ গুম করতে বলেশ্বর নদীতে ভাসিয়ে দেন এবং কেউ যেন দেখতে না পান, সেজন্য কচুরিপানা দিয়ে মৃতদেহটি ঢেকে দেন। পাশাপাশি নদীতে ফেলে দেওয়া হয় সাদিয়ার ব্যবহৃত মালামালগুলোও। তবে কানের একটি বলরিং খুলে রাখেন সিরাজ। যা সিরাজকে গ্রেফতারের সময় তার বসতঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে এখন পর্যন্ত সাদিয়ার মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গ্রেফতারকৃত দুই আসামি হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭
এমএস/এএসআর