ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

‘মরণকে ডাকি, আসে না’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৭
‘মরণকে ডাকি, আসে না’ অসংলগ্ন কথা বলেন আর বসে বসে নিজের মৃত্যুর প্রহর গোনেন শতবর্ষী মহর বানু। ছবি: বাংলানিউজ 

ঢাকা: ১৩  বছরের নাবালিকা গৃহবধূ এখন শতবর্ষী দৃষ্টিহীন বৃদ্ধা। অসংলগ্ন কথা বলেন আর বসে বসে নিজের মৃত্যুর প্রহর গোনেন। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ভাটি সাভার গ্রামের মৃত রহিম বক্সের স্ত্রী মহর বানু উপজেলার সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ বলে গ্রামবাসীর দাবি।

তাদের মতে, তার বয়স হবে ১০০ বছরেরও বেশি।

৬ ছেলে-৩ মেয়ের মা মহর বানুর বাড়িতে গেলে তিনি জানান, তাদের মধ্যে বার্ধ্যকজনিত কারণে ২ ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

 

‘আগে এই গ্রামের মানুষেরা ছনের চালা ও পাটকাঠির বেড়া দিয়ে ঘর বানাতো। আর এখন গ্রামে গ্রামে দালানঘরে ভরে গেছে’- কথা বলতে বলতে অসংলগ্নতা ভর করে মহর বানুর মাঝে। বলতে থাকেন, ‘দুগা দুগা ভাত খাই, হাঁটতে পারি, চোখে দেখি না। মরণকে ডাকি, আসে না। আমার ২ পুতরে নিলো, আমারে নিলো না মরণ’।

কানের সমস্যার কারণে মহর বানুর কাছে একটু উচ্চস্বরে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তার বয়স যখন ১৩ ছিল, তখন তার পরিবার রহিম বক্সের সঙ্গে বিয়ে দেয়। স্বামীর ঘরে আসার পরে প্রথম প্রথম সংসারের কিছুই বুঝতেন না। খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতেন। পরে আস্তে আস্তে সংসারের প্রতি যত্নবান হন।

৮ম ছেলে নাজিম উদ্দিনের কাছে থাকেন মহর বানু। তার স্ত্রী রওশন আরা পারভীন শাশুড়ির দেখাশোনা করেন।

শাশুড়ির প্রতি পারভীনের সেবা-যত্নের প্রশংসা করেন গ্রামের অনেকেই। নজরুল ইলাম জানান, পারভীনের ৪ সন্তানের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বাকিরা সবাই ছাত্রাবাসে থেকে পড়াশোনা করে।

তিনি জানান, মহর বানুর সব কাজকর্ম তার ছেলের বৌ পারভীনই করে থাকেন। গ্রামের অনেকেই মহর বানুর খোঁজ-খবর নেন, তার কাছে দোয়া নিতে আসেন।

মহর বানু জানান, তিনি তিনটি যুদ্ধ দেখেছে। কত মানুষ তার চোখের সামনে মারা গেছে। দেশ স্বাধীনের অনেক আগে যুদ্ধগুলো হয়েছে।

বাংলা‌দেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৭
এজেডএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।