বিশেষ করে বুধবার (২০ ডিসেম্বর) ভোর থেকে ঘন কুয়াশার কারণে আশপাশের কিছুই দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে গোটা রাজশাহী।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বুধবার রাজশাহীতে সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৪৪ মিনিটে। তবে সকাল পৌনে ৯টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।
বর্তমানে দৃষ্টিসীমা ২শ’ মিটারের নিচে নেমে এসেছে। ভোর থেকে প্রধান সড়কগুলোতে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে। বেলা যতই বাড়ছে কুয়াশাও যেন আড়মোড়া দিয়ে প্রকৃতির সব কিছুকে ততই কোলের মধ্যে টেনে নিচ্ছে।
এর ওপর বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দু’দিন হলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের তাপ না থাকায় হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন শহরের পথে-ঘাটে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো। সময় মেনে আসলেও এবার সময়ের আগেই যেন শক্তি হারিয়েছিল শীত। কিন্তু আকাশে মেঘ থাকায় বেড়েছে শীতের দাপট।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন বাংলানিউজকে জানান, আকাশে মেঘ থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। তবে তাপমাত্রা কমেনি। বুধবার ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে মঙ্গলবার রেকর্ড করা হয়েছিলো ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ফলে তাপমাত্রা বেড়েছে, কমেনি। বুধবার সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিলো ৯৯ শতাংশ।
এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত আবহাওয়া কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, এ সময় কুয়াশা পড়া অনেকটায় স্বাভাবিক। সাধারণত এ কুয়াশা কাটলে শীতের তীব্রতা বাড়ে। ফলে শীত আরও বাড়বে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এদিকে, এমন ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে কৃষিতে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এ সময়টায় এসে কুয়াশার কারণে বরাবরই বোরো বীজতলা ও রবি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিশেষ করে বোরোতে কোল্ড ইনজুরি ও আলুতে লেটব্লাইট (পচন) দেখা দেয়। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
রাজাশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, এ বছর শুরু থেকেই শীতের প্রকোপ কম। তবে মাঝ সময়ে এমন আবহাওয়া রবি শস্যের জন্য কাল হয়ে ওঠে। তাই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সতর্ক রয়েছেন। বর্তমানে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পরিদর্শন করছেন। ফসলকে নিরাপদ রাখতে কৃষকদের সব ধরণের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
এছাড়া কৃষকরাও আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছেন। মোবাইল অ্যাপস ও হট লাইনের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টাই কৃষি তথ্য সেবা নিচ্ছেন। সেই মতে ফসলের পরিচর্যাও করছেন বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এসএস/ওএইচ/