প্রশাসনের নাকের ডগায় বিএনপি ঘেঁষা হোটেল সিগালের এমন বেপরোয়া দখলবাজি বিপুল বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে। কেননা বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে তারেক রহমান ও বিএনপির কক্সবাজার ভিত্তিক প্রায় সব অনুষ্ঠানেই জড়িয়ে ছিলো হোটেল সিগাল।
আওয়ামী লীগ আমলে তাই হোটেল সিগালের এই দখলবাজি নানামুখী প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু সিগাল কর্তৃপক্ষ কেনো কিছুর কেয়ারই করছে না।
সরকারি জায়গা কেনো ফের দখলে নিচ্ছেন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত সিগালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুম ইকবালের ঔদ্ধত্যপূর্ণ জবাব, প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিক্রমে দখল নেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিগালের অবৈধ দখলে নেওয়া এই ৫০ শতাংশ জমির বর্তমান বাজার মূল্য ২৫ কোটি টাকারও বেশী।
উচ্ছেদ করা জায়গাটির প্রকৃত মালিক কে, সরকার নাকি সিগাল- প্রশ্নের জবাবে কৌশলী উত্তরে মাসুম ইকবাল বলেন, আমাদের ভেতরে যদি সরকারি জমি থেকে থাকে তাহলে আমাদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ করেছি।
এমন অস্বচ্ছ উত্তর নানামুখী জল্পনার জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে গোপন আঁতাত করেই হোটেল সিগাল ওই জায়গা দখলে নিয়েছে বলে অসন্তোষ দানা বাঁধছে স্থানীয়দের মধ্যে। সবার অভিযোগ, গত ১৯ এপ্রিল স্থানীয় প্রশাসন হোটেল সিগালের পাশাপাশি প্রাসাদ প্যারাডাইস, তরঙ্গ রেস্তোরাঁ, ক্যাঙ্গারু এবং সি রেস্তারাঁর অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করে সরকারি জমি দখলমুক্ত করা হয়। অন্যরা পরবর্তীতে সরকারি জমি বাদ দিয়ে যার যার সীমানা প্রাচীর তোলে। কিন্তু একমাত্র হোটেল সিগালই প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরকারি জমি ফের দখলে নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরেও সরেজমিনে গিয়ে গ্রিলের সীমানা প্রাচীরে দখল করা জায়গা আরো সুরক্ষিত করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বাংলানিউজকে বলেন, সিগালের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় এর আগেও সরকারি জমি দখল করে অনেক কিছুই করেছে। তারা সৈকতে ব্রিজ নির্মাণেরও চেষ্টা করেছিল। কক্সবাজারবাসী আন্দোলন করে তা ব্যর্থ করে দিয়েছে।
তবে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বাংলানিউজকে সাফ জানিয়ে দেন, অবৈধ দলখদার সিগালকে উচ্ছেদ করে উদ্ধার করা জায়গায় পার্ক নির্মাণ করবে জেলা প্রশাসন। এজন্য এরইমধ্যে একটি প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে। তাই সিগালকে জায়গা দখলের অনুমতি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এসআই/জেডএম