ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আহত-রক্তাক্ত খুলনা জেলা স্টেডিয়াম!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
আহত-রক্তাক্ত খুলনা জেলা স্টেডিয়াম! খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে সংঘর্ষ, ভাঙচুর

খুলনা: গুলি ও বোমা বর্ষণ, দফায় দফায় সংঘর্ষ, সীমাহীন তাণ্ডবে লণ্ড ভণ্ড নবনির্মিত খুলনা জেলা স্টেডিয়াম। কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। লেগে আছে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে খুলনা শিশু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কাউন্সিলের সদস্যদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনের ভোট গণানা নিয়ে জেলা স্টেডিয়াম ভবনে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।  

সংঘর্ষে আহত হন ১০ জন।

দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের এমন অবস্থা শুধু খেলোয়াড়-ক্রীড়ামোদীর কাছে নয়, গোটা খুলনাবাসীর কাছেই মর্মান্তিক। যা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে সবারই। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘৃণা ও নিন্দার ঝড় উঠেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সবাই।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান এবং সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে দু’টি প্যানেলের ২০ জন করে মোট ৪০ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশ নেন। নির্বাচনের প্রধান দুই প্রার্থীর দুজনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বড় নেতা হওয়ায় সংঘর্ষের সময় প্রশাসন অনেকটা নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে ভাঙচুরের ঘটনায় ফেসবুকে নিন্দার ঝড়দৈনিক খুলনাঞ্চলের সম্পাদক ও প্রকাশক মিজানুর রহমান মিলটন তার ফেসবুকে লিখেছেন, আহত-রক্তাক্ত খুলনা জেলা স্টেডিয়াম: বোবা কান্না ক্রীড়ামোদীদের!

রোটারিয়ান মোসলেহ উদ্দিন লিখেছেন, শিশু ফাউন্ডেশনের জন্য যারা সেবা দেবেন তাদের ফাউন্ডেশনই ঠিক আছে/কি নাই?

স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আজিজুল হাসান দুলু লিখেছেন, গতরাতে বর্ণাঢ্য সাজসজ্জার মধ্য দিয়ে নবনির্মিত খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন। ব্যয় কোটি টাকা।

মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম লিখেছেন, সরকারি দলের প্রয়োজনায় গতরাতে গুলি, বোমা, ব্যাপক ভাঙচুর সহকারে সাড়ম্বরে নবনির্মিত খুলনা জেলা স্টেডিয়ামের শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন।

জনউদ্যোগ খুলনার সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেন লিখেছেন, শিশুদের বাঁচাতে খুলনা শিশু হাসপাতাল সরকারিকরণ করতে হবে।

কালের কণ্ঠের খুলনা ব্যুরো অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক কৌশিক দে বাপী লিখেছেন, কষ্ট ও বেদনার। ক্রীড়াঙ্গনের মানুষদের অনেক আন্দোলনের ফসল এ স্টেডিয়াম সংস্কার হয়েছে। আমরা সংবাদকর্মীরা কম লিখিনি। ঘৃণা জানানোর ভাষা নেই।

এনটিভির খুলনা ব্যুরো প্রধান আবু তৈয়ব লিখেছেন, খুলনা শিশু ফাউন্ডেশন নির্বাচনে যা হলো, তাতে কেউই খুশি হতে পারলো না। প্রশাসনের ভূমিকা লজ্জাজনক।

দৈনিক জন্মভূমির আলোকচিত্রী দেবব্রত রায় লিখেছেন, খুলনা শিশু ফাউন্ডেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জেলা স্টেডিয়াম এখন লণ্ড ভণ্ড। এই টাকায় অনেক শিশু বেঁচে যেত।

দৈনিক প্রবাহের প্রতিবেদক কামরুল মনি লিখেছেন, উন্নয়নের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য ভাঙচুর-হামলা। আহা কি দেশ প্রেম!

বিএনপি নেতা আবু হুসাইন বাবু লিখেছেন, ইমেজ পুনরুদ্ধারে গুলি বোমার ব্যবহার ডিজিটাল সংস্করণ। ওদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করাও অন্যায়।

দৈনিক পূর্বাঞ্চলের প্রতিবেদক এইচ এম আলাউদ্দিন লিখেছেন, ইশ! অসুস্থ শিশুদের কতই না মূল্য? নির্বাচনে লাখ টাকার ছড়াছড়ি, আবার ফল ছিনিয়ে নিতে ভাঙচুর-রক্তপাত, ব্যালট ছিনতাই আরো কতো কী?

এমনও শত শত মন্তব্য আর সমালোচনায় খুলনার এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ পুরো নগরীতে তোলপাড় তুলেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৫ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এমআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।