পরদিন ০৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মারুফ জামানের ব্যবহৃত গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো: গ-২১-১৩৯৯) রাজধানীর তিনশ ফুট রাস্তা থেকে খিলক্ষেত থানা পুলিশ উদ্ধার করে। এরপর মারুফ জানাম নিখোঁজ রয়েছেন উল্লেখ করে ওই দিনই ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-২১৩) করে তার পরিবার।
তবে নিখোঁজের ১৮ দিন পার হলেও পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার পরিবারকে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্যও দিতে পারেনি।
মারুফ জামানের কোনো খোঁজ-খবর না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজ মারুফ জামানের ছোট মেয়ে সামিহা জামান বাংলানিউজে বলেন, এত দিন হয়ে গেল কিন্তু বাবার কোনো হদিস এখনও পাইনি। আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানানোর পর তাদের ভরসায় আছি। কিন্তু তারাও কোনো খোঁজ দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, নিখোঁজের পরপর বাসায় এসে কারা বাবার ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ক্যামেরা ও মোবাইল নিয়ে গেছে, তাদেরও কোনো পরিচয় বা তথ্য পুলিশ আমাদের জানায়নি।
এদিকে পুলিশ বলছে, নিখোঁজের পরপর মারুফ জামানের বাসায় মুখোশ পরিহিত সুঠামদেহীর তিনজনকে শনাক্তের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে তাদের চেহারা পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না। মারুফ জামানের নিখোঁজের পর বাসার ল্যান্ডফোনে যে দুটি অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল এসেছিল সেগুলো শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি তার অবস্থান শনাক্তের জন্য তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বাংলানিউজকে বলেন, নিখোঁজ মারুফ জামানকে খুঁজে পেতে পুলিশের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। তার বিষয়ে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি। তবে আমরা তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ করছি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামানের ছোট ভাই রিফাত জামান বাংলানিউজকে জানান, ৪ ডিসেম্বর মেয়ে সামিহাকে বিমানবন্দর থেকে আনতে সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বাসা থেকে গাড়ি চালিয়ে বের হন মারুফ। এর কিছুক্ষণ পর ৭টা ৪৫ মিনিট নাগাদ বাসার ল্যান্ডফোনে অজ্ঞাত নম্বর থেকে কল দিয়ে মারুফ পরিচয়ে গৃহকর্মীকে বলা হয় কম্পিউটার ঠিক করতে হবে। কেউ বাসায় এলে যেন তার কম্পিউটার দিয়ে দেওয়া হয়।
এর কিছুক্ষণ পর ৮টা ৫ মিনিটের দিকে তিনজন লোক বাসায় এসে তার ল্যাপটপ, কম্পিউটারের সিপিইউ, ২টি ক্যামেরা ও একটি স্মার্টফোন নিয়ে যায়। সে সময় মারুফের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলেও জানান রিফাত জামান।
মারুফ জামান সর্বশেষ ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কাজ করেছেন। এর আগে তিনি কাতারের রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসে কাউন্সেলর হিসেবেও কাজ করেছেন।
তিনি ১৯৭৭ সালে সেনাবাহিনীতে সিগন্যাল কোরের ‘ষষ্ঠ কোর্স’ ক্যাপ্টেন হিসেবে যোগ দেন। পরে ১৯৮২ সালে ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং ২০১৩ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে পদোন্নতি নিয়ে অবসরে যান।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৭
এসজেএ/এমজেএফ