প্রথমে সুন্দরবনের ধীরগতি নিয়ে অনেকে নানা রকম মন্তব্য করছিলেন। কেউ বলছিলেন, ধীরে গেলে তেল খরচ কম হয়।
বিষয়টি নিয়ে যখন ব্যাপক আলোচনা চলছে, আমাদের ট্যুরের দায়িত্বে থাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ণ বোর্ডের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরী অনুরোধ করলেন স্বাভাবিক গতিতে চলার জন্য।
এবার পাওয়া গেলো আসল খবর। সুপারভাইজার কামাল মিয়া জানালেন, আমাদের লঞ্চের হর্স পাওয়ার কম, যারা জোরে যাচ্ছে ওদের হর্স পাওয়ার বেশি। এই লঞ্চ এর চেয়ে বেশি জোরে যেতে পারবে না।
বেলুন চুপসে গেলে যেমন হয় সবার অবস্থা হলো তেমনি। এবার সুন্দরবন লঞ্চের চটকদার বিজ্ঞাপন নিয়ে হাসি তামাশা শুরু হয়ে গেলো। তবে কেউ কেউ বললেন সুন্দরবনের কিছু বড় লঞ্চ রয়েছে, সেগুলো অনেক ভালো।
এরপর সুপারভাইজার কামাল জানালেন, সুন্দরবন-২ লঞ্চটি কিন্তু এখন আর মূল কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় নেই। এই লঞ্চটি কিনে নিয়েছেন নুরজাহান শিপিং লাইনের মালিক কামরুল ইসলাম। লঞ্চটি এখন ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচল করে। অনেকদিন বিকল ছিলো মেরামত করে সদ্য নামানো হয়েছে।
নুরজাহান শিপিং লাইন ঢাকা থেকে এই একটি লঞ্চ পরিচালিত করে। কোম্পানিটি সুরভী-১ নামে বরিশাল -বরগুনা রুটে, এমভি ইমা ও এমএল বিসমিল্লাহ্ ভোলা বরিশাল রুটে চলাচল করে।
এরপর ধিকধিক করে এগিয়ে চলছিলো সুন্দরবন-২। কিন্তু ভোররাতে বাকেরগঞ্জের কাছে গিয়ে দেখা দিলো ভয়াবহ বিপত্তি। হঠাৎ ঝাকুনি দিয়ে থেমে গেলো লঞ্চটি। রুম থেকে বের হয়ে দেখা গেলো লঞ্চটি একটি ধানক্ষেতে উঠে গেছে। এরপর দীর্ঘক্ষণ কোনো নড়াচড়া নেই।
লঞ্চের মাস্টার, চালক ও সারেংয়ের লা জবাব। চালককে থেমে থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি কিছু জানাতে অস্বীকৃতি জানালেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক পরে সুপারভাইজার জানালেন পাখা ভেঙ্গে গেছে, মেরামতের চেষ্টা চলছে। কতক্ষণ সময় লাগবে সে বিষয়ে ধারনা দিতে পারলেন না।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর আবার চলতে শুরু করলে, এবার গতি স্যালোচালিত নৌকার থেকেও কম। সকাল ৯টায় গিয়ে চরগরবদী গিয়ে থেমে গেলো। অথচ এই সময়ের আগেই পায়রা বন্দরে ভেড়ার কথা ছিলো।
সারেং জানালেন এই লঞ্চ আর টেনে নেওয়া সম্ভব না। পরে ৫০ জনের সাংবাদিক টিমটি নেমে পড়লেন। পরে পটুয়াখালী থেকে বাস এনে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে অসমাপ্ত যাত্রা শুরু হয় বেলা সোয়া ১১টায়। প্রায় তিন ঘণ্টার পথ। এ নিয়ে যাত্রীদের খুব ক্ষোভ।
**ঢাকার বাইরে গিয়ে গোধূলিলগ্ন উপভোগ
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এসআই/বিএস