ফারজানা আক্তার স্নিগ্ধা ইঞ্জিনিয়ার। বাবা জাকির হোসেন বেলাল আকন্দ বগুড়ার সোনাতলা উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। সে অনুযায়ী ঠিক করা হয় বিয়ের দিনক্ষণ। কিন্তু অনেকটা বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুরত্ব। তাই বলে কি আর বিয়ে ঠেকে থাকে। ছেলের পরিবার ভাড়া করেন হেলিকপ্টার। আর মেয়ের পরিবার ছেলে বাড়িতে নিতে নিয়ে আসেন হাতি। হেলিকপ্টার থেকে নেমে হাতির পিটে চড়ে বর যান কনের বাড়িতে।
শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে চাঁদপুর থেকে হেলিকপ্টার যোগে বর সামছুল আরেফীন খান ও তার সঙ্গীরা সোনাতলা হাইস্কুল মাঠে অবতরণ করেন। বরকে নিতে কনের বাবাসহ স্বজনরা মাঠে যান। সেখান থেকে বর হাতির পিঠে চড়ে কনের বাড়ি কাবিলপুর গ্রাম যান। আর ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে রওনা হন বরযাত্রীরা।
ঘটনাটি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গাও গ্রামের মানুষজন এ উপজেলার কোনো বিয়েতে একসঙ্গে হেলিকপ্টার, হাতি ও ঘোড়ার গাড়ির আয়োজন কখনও দেখেননি। তাই এসব দেখতে বিপুল সংখ্যক কৌতুহলী বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নানা বয়সী মানুষজনকে ভিড় করতে দেখা যায়।
তারা ভিড় করেন হেলিকপ্টার অবতরণের স্থল সোনাতলা হাইস্কুল মাঠ। একইভাবে কনের কাবিলপুর গ্রামের বাড়িতেও ভিড় করেন বর, আকর্ষণীয়ভাবে সাজানো হাতি ও ঘোড়ার গাড়িগুলো দেখতে। কৌতুহলী এসব মানুষের ভিড় গড়ায় বিকেল নাগাদ।
মধ্য বয়সী মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ‘যুগ জামানার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। প্রযুক্তি মানুষকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে এসেছে। হরহামেশায় হেলিকপ্টারে চড়ে বর-কনের বিয়ের কথা শোনা যায়। কিন্তু এ উপজেলায় এর আগে এমন ঘটনা ঘটেনি’।
বয়সে অনেকটা নবীন মোস্তফা শাকিল নামের এক যুবক বাংলানিউজকে বলেন, ‘গ্রাম বাঙলার ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ি হারিয়ে যেতে বসেছে। এই বিয়েতে সেটা দেখার সুযোগ হলো। হেলিকপ্টারের পাশাপাশি হাতির আয়োজনটাও বেশ ভালোই লাগলো। সবমিলে এই বিয়েতে নতুন-পুরানো উপকরণ দেখে গ্রামবাসী অনেকটা পুলকিত’।
কিন্তু পালকিতে চড়ে আগের দিনে মানুষের বিয়ে হতো সেটা শুধু আমরা শুনি। এখনও পর্যন্ত সেই দৃশ্য দেখার সুযোগ হয়নি যোগ করেন যুবক মোস্তফা শাকিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এমবিএইচ/বিএস