যাদের অবদানে দেশ, দেশের স্বাধীনতা; দেশের সেই সব শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মাননা প্রদান করেছে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের বহুল প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন।
সম্মাননা নিতে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে এমন বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব) কামরুল হাসান ভূঁইয়া।
শীতের পড়ন্ত বিকেলে ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া প্রাঙ্গণে একাত্তরের সেক্টর কমান্ডার ও শীর্ষ পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাদের আজীবন সম্মাননা জানায় দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পরিবার। সম্মাননা নিতে আসা মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন পর একে অপরের দেখা পেয়ে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে যান। মুক্তিযোদ্ধারা এক বাক্যে ভবিষ্যতে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চায়; এ নিয়ে বক্তব্য দেন।
এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার বীর উত্তম বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে, এগিয়ে যাবে। এ দেশকে উন্নয়ন কেউ রুখতে পারবে না।
মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীরউত্তম বলেন, আমরা যুদ্ধকালে যেমন একত্রিত হতে পেরেছি, সেভাবে বাংলাদেশের সংকটকালে যেন একত্রিত হই, তা দেখতে চাই।
কর্নেল (অব.) এইচ এম এ গাফফার বীর উত্তম বলেন, আমি আশা করি, বঙ্গবন্ধু যে বাংলাদেশ দেখতে চেয়েছিলেন, আমরা যেন সেই বাংলাদেশ দেখে যেতে পারি।
মেজর (অব.) ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীরউত্তম বলেন, আমরা যুদ্ধ করেছিলাম মানুষের অধিকারের জন্য। দখলদার পাকিস্তানের খুন-গুম অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ভবিষ্যতে নির্ভেজাল গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাবে এটাই আমাদের আশা।
মুক্তিযোদ্ধা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিভক্ত বাংলাদেশ নয়, সমষ্টিগত বাংলাদেশ। যে দেশ ভিন্নমতের কথা শুনবে, সহনশীল হবে। এক ব্যক্তির বাংলাদেশ হবে না; এমন বাংলাদেশ আমার স্বপ্ন।
মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনবাংলা বেতারের শিল্পী কামাল লোহানি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের একটা প্রিয় স্লোগান ছিল, ‘ওরা মানুষ হত্যা করছে, আসুন আমরা পশু হত্যা করি’। এখনও পশু হত্যা শেষ হয় নি। যতদিন তারা থাকবে, ততদিন পযর্ন্ত আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলতে পারবো না।
মুক্তি সংগ্রাম এখনও চলছে মন্তব্য করে মুক্তিযোদ্ধা স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম...’ তবে ‘স্বাধীনতা’ মুক্তির সংগ্রামের একটি ধাপ মাত্র। মুক্তির সংগ্রাম চলবে অনাদিকাল পযর্ন্ত। পরবর্তী প্রজন্মকে সেই মুক্তির সংগ্রামের নেতৃত্বে দিতে হবে। যারা ‘৭১ সালের পর জন্মগ্রহণ করেছে। আসুন, আমরা সন্তানদের লালন করি, পৃথিবীর বুকে শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে তৈরি করি।
নাট্য ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীণ বাংলাদেশ দেখতে চাই।
সম্মাননা প্রাপ্ত অন্য মুক্তিযোদ্ধারা হলেন, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, লে. কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী, কর্নেল (অব.) জাফর ইমাম বীরবিক্রম, কমোডর (অব.) এ ডব্লিউ চৌধুরী বীর বিক্রম, কর্নেল (অব.) এইচ এম এ গাফফার বীরউত্তম, গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) শামসুল আলম বীরউত্তম, স্কোয়াড্রন লিডার (অব.) লিয়াকত আলী খান বীরউত্তম, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, কমান্ডার খলিলুর রহমান।
সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক ও নিউজ টোয়েন্টিফোর এবং রেডিও ক্যাপিটালের সিইও নঈম নিজাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউজ টোয়েন্টিফোরের হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স সামিয়া রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৭
এমসি/এসআইজে/এসএইচ