রোববার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নগরের খাদিম চা বাগান থেকে মরদেহটি করা হয়। নিহত আল আমিন নগরীর টিকরপাড়া এলাকার টুটুল মিয়ার ছেলে ও নগরের কাজিরবাজার মাদ্রাসার ছাত্র।
সিলেট কোতোয়োলি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা গোলাম দস্তগির বাংলানিউজকে জানান, শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে আল আমিনকে বেড়াতে নিয়ে যায় তারই ভগ্নিপতি ফয়ছল। রোববার বিকেলে ফয়ছলের দেওয়া তথ্যেই খাদিম চা বাগান থেকে হাত-পা বাধা অবস্থায় আল আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত আল আমিনের মামাতো সাকিব আহমদ বাংলানিউজকে জানান, বছর দেড়েক আগে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকার লাল মিয়ার ছেলে ফয়সল আহমদের সঙ্গে আল আমিনের বড় বোন আয়েশা বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আয়েশার সঙ্গে ফয়সলের পারিবারিক বিরোধ দেখা দেয়। এরই জের ধরে আয়েশা বাবার বাসা নগরীর টিকরপাড়ায় এসে আর ফেরত যায়নি। কয়েক দিন আগে স্ত্রীকে নিতে আসলে ফয়ছলের সঙ্গে আল আমিনের কথাকাটাকাটি হয়।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কিছুই না জানার ভান করে শ্বশুর বাড়িতে আসে ফয়সল। এ সময় বাড়ির লোকজন তার কাছে আল-আমিনের কথা জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানেন না জানান। কথাবার্তা ও আচরণ সন্দেহ হলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশের রাতভর জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিনকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেনি ফয়সল।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুর ২ টায় পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলেন ফয়ছল। শ্যালক আল আমিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে খাদিমপাড়া চা বাগানের ভেতরে রেখে এসেছে বলে জানায়। তার কথা মতো পুলিশ খাদিমপাড়া চা বাগানের পথে রওয়ানা দেয়। কিন্তু বাগানে যাওয়ার আগেই ফয়সল পুলিশের কাছে স্বীকার করে আল আমিনকে সে হাতপা বেধে গলা টিপে হত্যা করে মরদেহ বাগানে ফেলে রেখেছে। পরে পুলিশ তাকে নিয়ে বাগান থেকে আল আমিনের হাত বাধা মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের মা পারভিন বেগম বলেন, তার ছেলেকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেছে ফয়ছল। তিনি ছেলে হত্যাকারীর ফাঁসি দাবি করেন।
সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি গৌসুল হোসেন বলেন, ফয়সলকে রাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুখ খুলেনি। রোববার দুপুরে প্রথমে সে আল আমিনকে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে। পথিমধ্যে খুনের ঘটনা স্বীকার করে। তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করায় ও স্ত্রী আয়েশার উপর ক্ষুব্ধ হয়েই শ্যালক আল আমিনকে হত্যা করে, জিজ্ঞাসাবাদে এমনটি জানায় ফয়ছল।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৭
এনইউ/ওএইচ/