শ্যামপুরে ঢাকা ম্যাচ ফ্যাক্টরি সংলগ্ন লাকি ডায়িংয়ের (এম জে ডায়িং) ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শ্রমিকরা বাংলানিউজকে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন।
তারা জানান, পুরো ভবনের উপরেরতলা ছাড়া প্রতিটি তলায় একেক ধরনের কাজ করেন শ্রমিকরা।
অগ্নিকাণ্ডের সময় কারখানায় উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক গোলাপ মিয়া। তিনি জানান, দিনের ডিউটি শেষ করে রাতে ভবনের ছয়তলায় ঘুমাতে যাই। ভোরের দিকে ডিউটিরত শ্রমিকদের আগুন আগুন চিৎকার শুনে রুমে থাকা ২৭ জন শ্রমিকের ঘুম ভেঙে যায়।
‘কিছু বুঝে ওঠার আগে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামার চেষ্টা করতে থাকি, আগুনের তাপের কারণে নিচে নামা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে জীবন বাঁচাতে সবাই ছাদের দিকে চলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি গেটে তালা। পরে শাবল দিয়ে লোহার গেটের তালা ভেঙে আরো কিছু শ্রমিকসহ ছাদে অবস্থান নেই’।
মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছি মন্তব্য করে গোলাপ মিয়া বলেন, আর এক মিনিট হলে রুমের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রচণ্ড তাপে অথবা ধোঁয়ার কারণে তাদের মৃত্যু হতো। চোখ খুলে দেখতে পাই আগুন আর আগুন। আল্লাহ আমাদের নিজ হাতে বাঁচিয়েছেন।
কারখানার তৃতীয় তলায় গোডাউন ইনচার্জ হিসাবে কর্মরত গোলাপ মিয়া বলেন, আনুমানিক প্রায় আড়াইশ’ শ্রমিক চাকরি করেন লাকি ডায়িংয়ে। এক সপ্তাহ রাত ও এক সপ্তাহ দিনে এভাবেই শ্রমিকরা এ কারখানায় ডিউটি করেন। ঘটনার সময় আনুমানিক দেড়শ’ শ্রমিক রাত্রিকালীন ডিউটিতে ছিলেন।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লাকি ডায়িং ঘুরে দেখা যায়, আগুনে তৃতীয় তলার গোডাউনের মালমালসহ আরো যা কিছু ছিলো সব পুড়ে গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর শ্রমিকরা সেগুলো পরিষ্কার করছেন।
জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত লাকি ডায়িংয়ের ভবন মালিকের নাম মিজানুর রহমান। কারখানার মালিক হলেন দুইজন- মানিক মাস্টার ও আবদুর রাজ্জাক।
সোমবার ভোরে কারখানাটিতে আগুন লাগে। যা নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট কাজ করে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আটকা পড়া ৪০ থেকে ৫০ জন শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কন্ট্রোল রুমের ইন্সপেক্টর মাহমুদুল হাসান বাংলানিউজকে জানান, আতঙ্কে অন্তত ৫০ জন শ্রমিক ওই ডায়িং কারখানার ছাদে আটকা পড়েন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাদের উদ্ধার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এজেডএস/জেডএস