খানিকক্ষণ পর সাংবাদিকদের সামনে ডেকে মন্ত্রী বললেন, আমার নাতি। আমার সঙ্গে আসবেই।
এবার ধমকের সুরেই বললেন, তোমার তো কোনো কাজ নাই, তুমি এসে ডিস্টার্ব করতেছো, দৌড়ে বেড়াচ্ছো। জবাবে সে বলছিল, হুম। ও আচ্ছা! তাই!
এর পর্যায়ে মন্ত্রী বিরক্ত হলে আফিফ কানে কানে মন্ত্রীকে বলেন, আই হ্যাব এ নিউজ ফর ইউ... 'আজকে প্রাইম মিনিস্টারের বার্থ ডে'! তখন মন্ত্রী বলেন, এমনভাবে গল্প বানায় যেন সত্যি ঘটনা...।
নানা-নাতির খুঁনসুটির দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করছিলেন সাংবাদিক ও উপস্থিত সবাই তখন আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করছিল তাদের কথোপকথন।
সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলে, নাম আফিফ এবাদুল্লাহ হাসান। সান বিম স্কুলের নার্সারির ছাত্র। কীভাবে এসেছে, তোমার পাস কই? তখন মন্ত্রী বললেন, বল, আমার নানু আমার পাস।
মন্ত্রী কথা বলার ফাঁকে ফাঁকেই নিজের মতো করে কথা বলছিল শিশুটি। ‘তুমি এখানে গাড়ি নিয়ে এসেছ? আমার গাড়ি আসবে না?’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মন্ত্রী, আমার গাড়ি আসবে, তোমার গাড়ি আসবে না’। তখন আফিফ বলে, ‘আমার একটা ফ্রেন্ড আসবে…’।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের নাতি আফিফ। বাড়িতে বেড়াতে এলে নাতি রাতে মন্ত্রীর কাছে ছাড়া অন্য কারো কাছে ঘুমায় না বলে জানান মন্ত্রী। আর সকালে আসার সময় সচিবালয়ে তার অফিসে এসেই ছেড়েছে আফিফ।
মন্ত্রী বলেন, বাসাতেও যত রাতই হোক, ও আমার কাছে এসে ঘুমাবে। এবার আফিফ কানে কানে মন্ত্রীকে বলে, তোমার আর কোনো অফিস আছে? মন্ত্রী বলেন, বাড়ির নিচে একটা আছে, এটা একটা।
কোন ক্লাসে পড়? জানতে চাইলে আফিফ জানায়, নার্সারি-নার্সারি নাম্বার ওয়ান। দেয়ালে টানানো বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেখিয়ে মন্ত্রী বলেন, চিনতে পারো? আফিফ বলে, ‘চশমা পরা? উনি বঙ্গবন্ধু!’
এ সময় দফতরের ৮/১০ দশ জন কর্মকর্তা হাত তালি দিয়ে তাকে উৎসাহ দেন। মন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রীর এক মেয়ের বড় ছেলে আফিফ।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার ফাঁকে ফাঁকে ফাইলপত্র দেখছিলেন মন্ত্রী। কৌশলী আফিফ মন্ত্রীর কানে কানে কথা বলছিলো তখন।
‘আমি বাংলা ক্লাস করি (স্কুলে)’। সামনে বসা একজন জিজ্ঞেস করেন- নাম্বার ওয়ান স্পেল করতে পারো? ‘টু’ বানান করতে পারো? আফিফের ঝাড়া জবাব, ‘ডাজ নট ম্যাটার!’
নানুর নাম কী? প্রশ্নের উত্তরে আফিফ জানায়- মোস্তাফিজুর রহমান। মন্ত্রী প্রশ্ন করেন, মিনিস্টারের গাড়িতে কী থাকে? হোয়াট ইজ দ্যা ডিফারেন্ট বিটুইন… প্রশ্ন শেষ করার আগেই আফিফের প্রতিক্রিয়া, ‘তুমি ইংলিশ বলো না, বাংলা বলো’।
তখন বাংলায় প্রশ্ন করেন মন্ত্রী। দুষ্টুমি করেই আফিফ বলে, তফাৎ মানে কী? ডিফারেন্স মানে কী?
এবার মন্ত্রীর কোল থেকে দূরে সরে গিয়ে দুষ্টুমি করে চাকা লাগানো চেয়ার ঠেলে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে নিয়ে যায় আফিফ। টেবিলে বসে চালু করছিলো কম্পিউটার।
পরে আবার বায়না ধরে- ‘নানু, আমি বেল টিপি, টিপি না!’
এভাবে বিকেল তিনটা পর্যন্ত নানার দফতরে থেকে তবেই আফিফ বাসায় যায় বলে জানান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ