আলোচনায় উঠে আসছে কেমন হবেন নতুন নগরপিতা, সম্প্রতি মৃত্যবরণ করা মেয়র আনিসুল হকের সঙ্গে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তুলনা। সবারই এক কথা, জলাবদ্ধতামুক্ত,যানজটমুক্ত, মশকমুক্ত পরিচ্ছন্ন নগরীই নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশা।
সদ্য হারানো মেয়রের শোক ভুলে গণমাধ্যমে উপ-নির্বাচন সামনে রেখে প্রকাশিত-প্রচারিত খবরে ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ দেখে নগরবাসীও নতুন মেয়রকে নিয়ে মনে মনে অঙ্ক কষছেন। নগরীর অভ্যন্তরে চলাচল করা গণপরিবহনেও তার আভাস পাওয়া যায়। গণপরিবহনের আসনে হেলান দিয়ে অনেকেই পত্রিকায় উপ-নির্বাচনের খবরে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন। জেনে নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যাকগ্রাউন্ড।
আকিক পরিবহনের যাত্রী মিরপুর ১৪ নম্বরের বাসিন্দা নেয়ামুল হোসেন এমনই একজন। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বাংলানিউজকে তিনি বলেন, মেয়র আনিসুল হক মারা যাওয়ার পরপরই কে হবেন মেয়র এ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তিনি বেশ কাজ করেছেন নগরীর জন্য। অনেক কাজ হাতে নিয়েছিলেন। তার পথ ধরেই নতুন মেয়র এগিয়ে যাবেন, নগরীর জলবদ্ধতা ও যানজটসহ বড় সমস্যাগুলো দূর করবেন এটাই আমরা চাই।
একই পরিবহনের যাত্রী তবিবর রহমান। তিনি বলেন, আমার বাসা বাড্ডায়। রাস্তায় যানজট, ধুলোবালি, ময়লা আর্বজনা। বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা। সারাবছর রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি লেগেই থাকে। মেয়র আনিসুল হক অনেক কাজ করেছেন। তবে তিনি উন্নত এলাকাগুলোরই বেশি উন্নয়ন করেছেন। আমরা চাই, নতুন মেয়র যিনি হবেন সব এলাকার উন্নয়ন সমানভাবে করবেন। অলিগলির রাস্তাগুলোর দিকেও নজর দেবেন।
ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনও তোড়জোড় শুরু করেছে। যথানিয়মে আগামী ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে ভোট গ্রহণের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ হতে পারে বলে ইসির বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে। এবারেই প্রথম ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। ফলে এ নির্বাচন রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগের পরীক্ষা হিসেবেও ধরা হচ্ছে।
ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন নিয়ে রাজনীতি দলগুলোর মধ্যে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। বিজিএমই’র সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম মেয়র পদে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী। তাঁর নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এরই মধ্যে তিনি নির্বাচনী এলাকা ঘুরে গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করছেন। গণমাধ্যমের কাছে নিজের নানা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।
অন্যদিকে আরেক বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো উপ-নির্বাচন নিয়ে এখনো মাঠে নামেনি। তবে দলটিতেও এই নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে চিন্ত ভাবনা চলছে বলে জানা যায়।
‘কেমন মেয়র চান?’ --জানতে চাইলে চাকুরীজীবী মোসাদ্দেক আলী বলেন, এবার তো দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের পরিবেশও এবার একটু আলাদা হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ঢাকা দিনেদিনে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। আর মেয়র যে দলেরই হোন তার দায়িত্ব হবে ঢাকাকে আগে বসবাসযোগ্য করে গড়ে তোলা।
ঢাকার মেয়র প্রার্থী হিসেবে সব সময় রাজনীতিকরাই এগিয়ে ছিলেন। এখন ব্যবসায়ী, শিল্পপতিরাও যুক্ত হচ্ছেন। নির্বাচন আসুক জেনে বুঝে প্রার্থী নির্বাচন করবো।
গত ৩০ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন জননন্দিত মেয়র আনিসুল হক। এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। নির্বাচনী বিধি অনুসারে আসন শূন্য হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
এমসি/জেএম