মেলা প্রাঙ্গণে নারীদের গহনা ও জুতার দোকানের প্রায় স্টলে এভাবে হাকডাক চলছে। দেড়শ’, ২শ’ টাকায় জুতা ও ৩০/৪০ টাকায় গহনা সরঞ্জাম বলে দিচ্ছে পণ্যের মান।
আরেকটি স্টল থেকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে-জিরার দামে হীরা কিনুন। দুটি কাঠের টুকরোতে লোহা লাগানো কাঠের যন্ত্রটি চাপ দিলে রুটি তৈরি করা যায়। দাম মাত্র আড়াই হাজার টাকা।
তবে মেলার অভ্যন্তরে যাই থাকুক আকর্ষণ আছে ফটকে। আমেরিকার ক্যাসল গেটের আদলে করা রঙিন গেটে কাবু হয়ে মেলায় ঢুকছেন ক্রেতারা। প্রধান ফটকের অভ্যন্তরের ড্যান্সিং ঝর্ণা দেখা এবং শিশুদের বিনোদনে কয়েকটি রাইডে চড়িয়েই কেবল সান্ত্বনা।
দুই-একটি আর্টিফিসিয়াল ফুলের দোকান ও দুই-চারটি পরিচিত দেশি কোম্পানি ছাড়া দেখা মেলেনি কোনো বিদেশি কোম্পানির। যদিও এই মেলার নাম দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। কিন্তু উদ্বোধনের ৫ দিন পেরিয়ে গেলেও স্টল দেয়নি কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠান। মেলা কর্তৃপক্ষ ফরেন জোন করলেও তা কেবল ঘোষণায় সীমাবদ্ধ থেকে গেছে।
অথচ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা বলেছিলেন, দেশিয় পণ্যের সঙ্গে ক্রেতাদের বিদেশি পণ্যের পরিচয় করিয়ে দিতেই এমন মেলার আয়োজন।
মেলায় আগত দর্শকরাও পণ্যের মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। শহরের চালিবন্দর এলাকার দেবব্রত রায় বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় বিদেশি প্রতিষ্ঠান থাকবে, দেশি পণ্যের সঙ্গে বিদেশি পণ্য ক্রয়ের উদ্দেশ্য নিয়েই তাদের আসা। কিন্তু মেলা ঘুরে ফুটপাত ও নগরের রাস্তার ধারের দোকানের পণ্যে হতাশ তারা।
সিলেট মেট্টোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসএমসিসিআই) আয়োজনে মাসব্যাপী এবারের মেলায় ২২টি প্যাভিলিয়ন, বক্স এরিয়াতে ৪০টি স্টল ছাড়াও মাঠের অভ্যন্তরে চারপাশ জুড়ে আছে ১২০টি স্টল। এসব স্টলের মধ্যে কেবল এসকেবি, আরএফএলসহ দেশি কয়েকটি পরিচিত কোম্পানি অংশ নিয়েছে। তবে ফরেন জোন নাম থাকলেও অংশগ্রহণ নেই কোনো বিদেশি কোম্পানির।
মেলার ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে থাকা চেম্বার সদস্য মঈন খান বাবলু বলেন, মেলায় টিকিটের কুপনের ওপর মূল্য বাবদ ৩১টি পুরস্কার রয়েছে। এরমধ্যে প্রথম পুরস্কার একটি ১১০০ সিসির সুযোকী প্রাইভেট কার, দ্বিতীয় পুরস্কার পালসার মোটরসাইকেল। গেটে ২০ টাকায় প্রবেশ কুপনের ওপর লটারিতে বিজয়ীরা পাবেন এই পুরস্কার।
মেলা পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক সিলেট মেট্টোপলিটন চেম্বারের পরিচালক আব্দুল জলিল নজরুল বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকার বাইরে আন্তর্জাতিক মানের মেলা পরিপূর্ণভাবে করা সম্ভব হয় না। এ ধরনের একটি মেলা করতে গেলে অন্তত ৩/৪ মাস আগে অনুমতি পেতে হয়। আমরা অনুমতি পেয়েছি ১৫ দিন আগে। এতো স্বল্প সময়ে বিদেশি কোম্পানিকে আমন্ত্রণ জানালেও তারা অংশ নিতে পারেনি।
মেলা কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, এবারের ঢাকার মেলার চায়না স্টলের কিছু প্রোডাক্ট স্টলে দিলেও তাদের লোকবল দেয়নি। এছাড়া পাকিস্তানি ৪টি ও থাই একটি কাপড়ের স্টল মেলায় আছে, দাবি করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৮
এনইউ/আরআর