বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা কমছে না। তাই নিম্ন আয়ের মানুষেরা দিনের বেলাও আগুন জ্বালানোসহ নানানভাবে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন প্রতিনিয়ত।
ঝালকাঠি পৌর শহরের সকল ব্যস্ততা যেন শীতের কারণে সন্ধ্যার সাথে সাথেই থমকে যাচ্ছে। সন্ধ্যা থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় কর্মচাঞ্চল্যহীন হয়ে পড়ছে শহুরে জীবন। একইভাবে গ্রামাঞ্চলের জনজীবনও হারিয়েছে তার স্বাভাবিক গতি। তবে খেটেখাওয়া মানুষেরা কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে ছুটছেন কর্ম ও রুটি-রুজির তাগিদে।
পৌর শহরের ভ্যান চালক রিয়াজ জানান, শীত আর বর্ষা বলতে কোনো কথা নেই। চারজনের সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিদিন তাকে কাজের সন্ধানে নামতে হয়। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার শীত বেশি, সঙ্গে কনকনে বাতাস। ভ্যান চালানোর সময় শরীরের হাড় কাপিয়ে দেয় বলেও জানান তিনি।
দিনের পর দিন আবহাওয়ার কারণে ঠাণ্ডাজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। বিশেষ করে নিউমোনিয়া, হাঁচি-কাশি, স্বর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। রোগে আক্রান্তদের মধ্যে সিংহভাগই শিশু ও বৃদ্ধ।
শিশুদের যাতে ঠান্ডা না লাগে সেজন্য সর্বদা গরম পোশাক পরিধান করানোর পাশাপাশি ঠাণ্ডাজনিত যে কোন রোগে আক্রান্ত হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সদর হাসপাতালের ডা. বদরুল ইসলাম।
শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরম কাপড়ের বাজারে বেচাবিক্রি বেড়েছে। বিশেষ করে ভ্যান গাড়ি ও ট্রলিতে করে সস্তায় শীতের কাপড় বিক্রি এখন জমজমাট। নিম্ন আয়ের মানুষেরা টুপি, মাফলার, সোয়েটারসহ নানা ধরনের পুরনো পোশাক কিনছেন ভ্যান থেকে। আবার শীতকালীন নানান সবজির উৎপাদনও যেমন বাড়ছে, তেমনি দামও শুরুর থেকে কিছুটা কমেছে।
চলতি মাসজুড়েই এমন শীতের তীব্রতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আনিসুর রহমান বলেন, মাঝারি ধরনের শৈত প্রবাহের কারণে এখন বরিশালে শীতের তীব্রতা একটু বেশি। তবে ঊপকূলীয় এলাকায় বরিশাল-ঝালকাঠির চেয়ে শীতের পরিমাণ অনেকটাই কম রয়েছে।
সোমবার (০৮ জানুয়ারি) বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তবে কুয়াশার তীব্রতা কম বলে জানিয়ে ঝালকাঠি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তাইজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে কুয়াশা বেশি হলে সরিষার ফুল পড়ে যায় এবং আলু গাছের গোড়ায় পচন ধরে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমএস/এমজেএফ