দিনের বেলা কোনোরকম কাটলেও সন্ধ্যার পর থেকেই তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। সবচেয়ে বিপাকে রয়েছে শিশু ও বৃদ্ধরা।
ঘন কুয়াশা আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে খেটে খাওয়া মানুষ ও দিনমজুর শ্রেণির লোকজনের কাজে কর্মে যেতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ঠাণ্ডার প্রকোপে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। ফলে এসব পরিবারের মধ্যে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে।
জেলার সদর হাসপাতালসহ ছয় উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে শীতজনিত নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি। এদিকে এক সপ্তাহে জেলায় তীব্র শীতে তিনজনের মুত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অমল চন্দ্র সাহা বাংলানিউজকে বলেন, তীব্র শীতের কারণে অনেকেই ডায়রিয়া, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসছেন। পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে আমরা সবসময় প্রস্তুত আছি সেবা দেওয়ার জন্য। চিকিৎসকরা আন্তরিকতার সঙ্গে রোগিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার দক্ষিণ ধানঘড়া গ্রামের দিনমজুর নাজমুল মিয়া বলেন, শীতের কারণে কাজে যেতে খুব কষ্ট হয়। তবুও জীবিকার তাগিদে ও পরিবারকে বাঁচানোর জন্য কাজ না করে উপায় নাই। আর শীতের দিনে কাজ পাওয়াও কষ্টের, মানুষ কাজে নিতে চায় না। তবুও মানুষের বাড়িতে ঘুরে ঘুরে কাজের ব্যবস্থা করে দিন শেষে চাল ডাল নিয়ে ঘরে ফিরতে হয়।
এদিকে গাইবান্ধার চরাঞ্চলগুলোতে শীতের তীব্রতায় নাজেহাল জনজীবন। পর্যাপ্ত গরম কাপড় না থাকায় খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে তাদের। জিগাবাড়ির চরের দরিদ্র ফুল মিয়া বলেন, একটা কম্বল দিয়ে শীত মরে না, আর একটা পাইলে এবারে শীতের কষ্ট কমতো।
জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের একার পক্ষে তীব্র শীতে নাজেহাল বিশাল এ জনগোষ্ঠীকে গরম কাপড় ও সাহায্য সহযোগিতা করা সম্ভব নয়। তাই তিনি এনজিও সংস্থা, ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে জেলার ৮২ ইউনিয়নে শীতার্ত মানুষের মধ্যে প্রায় ৬০,০০০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আরও গরম কাপড় বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৭ ঘণ্টা, ১০ জানুয়ারি, ২০১৮
আরএ