তবে বরিশালে জিরো টলারেন্স নীতিতে গত ৬ মাসে ইয়াবাসহ ৫ পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৮ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুরে বরিশালের লাকুটিয়া সড়ক থেকে দুই পুলিশ সদস্যকে ৪০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
আটকরা হলেন- বরিশাল রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) কনস্টেবল পার্থ চন্দ্র দে ও তানজিলুর রহমান।
পার্থ বোরহান উদ্দিন উপজেলার কাছিয়া এলাকার বাসিন্দা উৎপল চন্দ্র দের ছেলে এবং তানজিলুর ভোলা সদর এলাকার বাসিন্দা ফরিদুর রহমানের ছেলে। পরে উভয়ের বিরুদ্ধেই পুলিশ বাদী হয়ে নগরের এয়ারপোর্ট থানায় মামলা দায়ের করে এবং আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এর আগে গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বরিশাল নগরের আল-সামস নামক আবাসিক হোটেল থেকে ইয়াবাসহ ভোলা আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কনস্টেবল রমজান আলী এবং তার দুই সহযোগীকে আটক করে থানা পুলিশ। আটকের পর মামলায় দায়ের শেষে আদালতের মাধ্যমে তিন জনকেই জেলহাজতে পাঠানো হয়।
একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর বরিশাল নগরের রুপাতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের কনস্টেবল ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরামদ্দি ইউনিয়নের হলতা গ্রামের মো. শাহজাহান সিরাজের ছেলে মো. সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৪শ ৫২ পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
একই বছরের ৭ জুলাই বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের শাখারিয়া বাজার থেকে বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ কনস্টেবল কাম কম্পিউটার অপারেটর মেহেদী হাসানকে ২৯ পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। মেহেদী হাসান বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের মুশুরিয়া গ্রামের মৃত আইউব আলী আকনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে বানারীপাড়া থানা পুলিশ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে।
এছাড়াও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার মামলায় বরিশাল মহানগর ডিবির সাবেক এসআই চিম্ময় মিত্র গত জুন মাসে কারান্তরীন ছিলো।
তবে সূত্র অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৪ অক্টোবর বরিশাল নগরের আবাসিক হোটেল সুখী থেকে ইয়াবাসহ মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কনস্টেবল সুমন চন্দ্র হালদারকে আটক করার পরই টনক নরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের।
শুরু হয়ে যায় নিজ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি নজরদারী। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে শুধু বরিশালেই মাদক সংক্রান্ত ঘটনা কিংবা মামলায় আসামি হয় ৫ পুলিশ সদস্য। যদিও এ থেকে পরিত্রাণ পেতে মোটিভেশন ও জিরো টলারেন্স নীতির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাহিনীর সবাইকে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) খান মুহাম্মদ আবু নাসের বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। যারা বিক্রেতা এবং যারা সেবনকারী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মাদক পাচারের রুটগুলো বন্ধে কাজ করা হচ্ছে। ’
‘আর মাদকের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন, তাকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। সে পুলিশের লোকহোক আর ক্ষমতাসীন হোক না কেন। আমাদের বর্তমান পুলিশ কমিশানরের নির্দেশও এমনটাই রয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘মেট্রোপলিটন পুলিশের এক কনস্টেবল মাদকসহ আটক হয়েছে, তার মামলাও নিয়েছি এবং দু’দিন আগে যে আরআরএফ’র দুই সদস্য ধরা পরেছে তাতেও মামলা হয়েছে। আমরা আমাদের সদস্যদের মোটিভেট করছি। আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের বিষয়টি তাদের অবহিত করছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৮
এমএস/জিপি