ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঘন কুয়াশায় লঞ্চ যেন হাতড়ে হাতড়ে চলে

মহিউদ্দিন মাহমুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
ঘন কুয়াশায় লঞ্চ যেন হাতড়ে হাতড়ে চলে ঘন কুয়াশায় লঞ্চ যেন হাতড়ে হাতড়ে চলে

চাঁদপুর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ থেকে: চাঁদপুর থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো সময় মতো ছাড়লেও ঘন কুয়াশার কারণে যেন হাতড়ে হাতড়ে পথ চলতে হয়েছে।

এই অবস্থা ছিলো শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।  

নদীর মধ্যে দুপুর ১২টার দিকেও ঘন কুয়াশায় ১০০/১৫০ মিটার দূরের কিছু দেখা যাচ্ছিল না।

ওয়্যারলেসে কথা বলে পরস্পরের অবস্থান জানিয়ে পথ চলতে হয়েছে জলযানগুলোকে। অবস্থান বোঝানোর জন্য ঘন ঘন হুইসেল দেওয়া হচ্ছিল। ম্যাপ, কম্পাস আর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে জলযান চালিয়েছেন মাস্টাররা। ঘন কুয়াশায় লঞ্চ যেন হাতড়ে হাতড়ে চলে

সকাল ১১টায় চাঁদপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয় লঞ্চ রাসেল-৩। রাসেল-৩ এর মাস্টার ব্রিজে ওয়্যারলেস সিস্টেমে (এর মাধ্যমে চাঁদপুর থেকে চট্টগাম ও ঢাকা বা তারও বেশি দূরত্বে যোগাযোগ সম্ভব। ) লঞ্চসহ অন্যান্য জলযানের অবস্থান জানানো এবং অন্যদের অবস্থান জেনে নেওয়া হচ্ছিল।

ওয়্যারলেসে এক জলযান মাস্টারকে বলতে শোনা গেলো, ওস্তাদ যে যার ডাইনে ডাইনে থাইকেন, হাতড়ায় হাতড়ায় আসতেছি।

ফগ লাইট জ্বালিয়ে যার যার ডান দিক ধরে ধীরে ধীরে সামনে এগিয়ে চলছে জলযানগুলো।  

দুপুর ১২টার দিকে লঞ্চের সামনের দিকে দাঁড়িয়ে দু’জন মাস্টারকে অন্য জলযানের অবস্থান নির্ণয়ে সহায়তা করতে দেখা গেছে। মাস্টার ব্রিজে থেকে লঞ্চটি চালান ওয়াটার মাস্টার আবুল কালাম।

তিনি বলেন, কুয়াশায় একটু সমস্যা হয়। আস্তে আস্তে চালাতে হয়। চরে আটকা পড়া, অন্য লঞ্চ, ট্রলার, বাল্কহেট বা অন্য কোনো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা থাকে। গতকাল রাতে মেঘনায় একটি বাল্কহেট ডুবে গেছে। ছোট লঞ্চ ও ট্রলার নিয়মকানুন কম মানে, তাই সমস্যা হয়। ধাক্কা লাগলে এগুলো ডোবেও বেশি। তারপরও সিরিয়াল মতো চলে না, উথাল-পাথাল করে চালায়।  

সকালে আরো ঘোলা ছিলো। সকালের লঞ্চগুলো আরো ধীরে চলেছে। ওদের পৌঁছাতে আমাদের চেয়ে দুই/তিন ঘণ্টা বেশি সময় লেগেছে, যোগ করেন আবুল কালাম।

দুপুর সাড়ে ১২টার পর সূর্যের মুখ দেখার পর কুয়াশা কমতে থাকে। তবে বেলা দেড়টার দিকেও কুয়াশার কারণে ৪০০/৫০০ মিটারের বেশি দূরের কিছু দেখা যাচ্ছিল না।  ঘন কুয়াশায় লঞ্চ যেন হাতড়ে হাতড়ে চলে

এদিকে, সকাল ১১টার আগে পর্যন্ত অনেক যাত্রীকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এসে দীর্ঘ সময় কুয়াশা কমার এবং বড় লঞ্চ আসার অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। যাদের প্রায় সব যাত্রী ১১টার লঞ্চে রওনা হন।

হাজীগঞ্জের টোরাগড়ের বাসিন্দা আবুল বাশার। তিনি লঞ্চঘাটে আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করে সকাল ১১টায় রাসেল-৩ লঞ্চে ঢাকার উদ্দেশে পরিবার নিয়ে রওনা দেন।  

আবুল বাশার বলেন, সকালে একটি লঞ্চে উঠেছিলাম, কিন্তু সাহস হলো না, তাই পরে নেমে গেছি। কুয়াশা কমার জন্য অনেক সময় অপেক্ষা করে শেষে এটাতে উঠেছি।

তিনি বলেন, এতো কুয়াশার মধ্যে লঞ্চে ওঠা ঝুঁকিপূর্ণ। আর ছোট লঞ্চে ওঠা মানে ঝুঁকি আরো বেশি।

এদিকে, সকাল বেলা কুয়াশায় সড়ক পথে লঞ্চ টার্মিনালে আসতেও দুর্ভোগে পড়তে হয় অনেককে। একটু দূরের কিছুও দেখতে না পাওয়ায় ধীরে চলাচল করেছে গাড়িগুলো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
এমইউএম/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।