ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগায় হকিস্টিক দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগায় হকিস্টিক দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর ভাংচুরকৃত প্রাইভেটকার/ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: শুক্রবার সাপ্তা‌হিক বন্ধের দিনে আদাবর থেকে গাড়িযোগ বনানী যা‌চ্ছিলেন আহনাফ মাহাদী, রাগিব ও না‌হিন। গাড়ি চালা‌চ্ছিলেন না‌হিন। তিন বন্ধুর দুইজন স্কলা‌স্টিকার ছাত্র, আরেকজন থাকেন লন্ডনে। সবার বয়সই ১৫-১৬ বছরের মধ্যে হবে।

গাড়িটি আদাবর-৮ লিংরোড হয়ে শ্যামলীর মূল সড়কে প্রবেশের মুখেই ঘটে বিপ‌ত্তি। উল্টো দিক দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আস‌ছিলেন পু‌লিশ কনস্টেবল আ‌রিফুল ইসলাম র‌নি।

যি‌নি কূটনৈ‌তিক এলাকায় ডিউ‌টি করেন। আ‌রিফুল ইসলামের বাবা স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের (এসপিবিএন) সহকা‌রী উপ প‌রিদর্শক (এএসআই) সাইফুল ইসলাম গণভবনে ডিউ‌টি করেন।

ঘটনার সময় উপ‌স্থিত নাম প্রকাশে অ‌নিচ্ছুক এক সাবেক সেনা সদস্য বাংলা‌নিউজকে বলেন, ছেলেগু‌লোর কোনো দোষ নেই, ওই পু‌লিশ সদস্যের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগায় তিনি গাড়িটি ব্যারিকেড দেন। পরে তিনি হকস্টিক দিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করেন। কিন্তু হকিস্টিক কোথায় পেলেন বুঝতি পারছিনা। আ‌মি হকিস্টিক ধরার পরেও তিনি গাড়ির পেছনের গ্লাস ভা‌ঙেন।

ভুক্তভোগী মাহাদী জানান, ওই পুলিশ সদস্যদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা লাগায় তিনি আমাদের গাড়ি ব্যারিকেড দেন। এ সময় ঘটনায় জন্য আমরা তার কাছে সরি বলে ভুল স্বীকার করি, কিন্তু তিনি আমাদের কোনো কথা না শুনে প্রথমে হেলমেট দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেন। এরপর হকিস্টিক দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাঙেন, আর রা‌গিবকে পু‌লিশ বক্সের ভেতরে নিয়ে পেটান।

এরপর ওই পুলিশ সদস্যসহ আমাদের সবাইকে আদাবর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ওই পু‌লিশ সদস্যর বাবা সাইফুল ইসলাম শ্যামলীতে ছুটে আসেন। এসময় তিনি উপ‌স্থিত জনতার সামনে ছেলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাইলেও ছেলে তোয়াক্কা না করে উল্টো রাগ দেখান।

পরবর্তীতে ঘটনার কথা শুনতে পেয়ে আদাবর থানায় ছুটে আসেন ভুক্তভোগী রা‌গিবের প‌রিবার। রা‌গিবের বাবা আরিফ চৌধুরী ও মা ডাক্তার সাব‌রিনা আ‌রিফ। তারা থানায় এসে পুলিশের কাছে বিস্তারিত ঘটনা জানাতে চান।

সাব‌রিনা আ‌রিফ বলেন, আমরা এ ঘটনার একটা বিহিত চাই, পু‌লিশের প্র‌তি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। কিন্তু আমাদের ছেলেদের যেভাবে মেরেছে তাতে ওরা অনেক ভয় পেয়েছে। গাড়ির গ্লাসগু‌লো শরীরে লেগেছে।

আ‌রিফ চৌধুরী বলেন, মামলা করতে চাই না, আমরা ওই পুলিশ সদস্যের বিভাগীয় প্রধান বরাবর অ‌ভিযোগ করবো তিনি যেন শা‌স্তির ব্যবস্থা করেন।

কিন্তু পু‌লিশ কনস্টবল আ‌রিফুল ইসলাম হকিস্টিক কোথায় পেলেন এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে কৌতুহল দেখা দিয়েছে। ওই পু‌লিশের বাবা ভুক্তভোগী প‌রিবারের কাছে অনুনয়-বিনয় করেন এবং পুরো গাড়ি মেরামত করে দেওয়ার কথা বলে ছেলের পক্ষ থেকে ক্ষমা চান।

রা‌গিবের বাবা বলেন, আপনার ছেলেকে ক্ষমা চাইতে হবে। এসময় পু‌লিশ সদস্য র‌নি বলেন, তোমাদের গায়ে হাত দেওয়ার জন্য স্যরি।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ও‌সি) শা‌হিন আলম জানান, উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলা‌দেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮
এসএম/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।