জেলা উন্নয়ন মেলায় আসা সাধারণ মানুষকে আনন্দ দিতে ও দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে আয়োজন করা হয় এ লাঠি খেলার।
কাঁসার শব্দে চারপাশে যেন উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে লাঠিয়ালরা। খেলোয়াড়রা একে অপরের সঙ্গে লাঠি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। লাঠি দিয়ে অন্যের আক্রমণ ঠেকাতে থাকেন। আর এরই মধ্যে নিজের চেয়ে বড় লাঠি নিয়ে অদ্ভুত সব কসরত দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন লাঠিয়ালরা। আর লাঠিয়াল দলের ক্ষুদে এক লাঠিয়ালের কসরত দেখে অবির্ভূত হন প্রবীণ লাঠিয়াল। দল বেধে আগত দর্শকদের সালাম বিনিময় করেন।
এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের উৎসাহ দেন।
কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়া এ লাঠি খেলা দেখতে মেলা প্রাঙ্গণে হাজির হন নানা বয়সের মানুষ। ইট-পাথরের টুংটাং আওয়াজকে হার মানিয়ে কিছুটা হলেও পুরানো দিনের গ্রামীন চিত্ত বিনোদনের সুযোগ পান বয়ো-বৃদ্ধরা।
লাঠিয়াল মেহেদী আক্তার ও অমিত খান বলেন, সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শনার্থীদের বাড়তি আনন্দ ও বিনোদন জোগাতে আমরা লাঠি খেলা দেখায়। এ খেলা আমাদের পূর্ব-পুরুষের। আমরাও আমাদের সন্তানদের এ খেলা শিখিয়েছি। যাতে তারাও এ খেলা দেখিয়ে মানুষকে আনন্দ দিতে পারে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে গ্রামীণ ঐহিত্যবাহী এ খেলাটি টিকে থাকবে, না হলে হরিয়ে যাবে।
দর্শনার্থী জান্নাতুল কবীর রাতুল, ফাহমিদা আক্তার, সালমা আক্তার কেয়া, নিউটন মোল্যা জানান, মাঠের স্বল্পতা আর ভিডিও গেমসের কারণে আমাদের শিশুরা ঘরমুখো। প্রথমবারের মত আমরা গ্রামিন এ খেলা দেখলাম।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান সরকার বলেন, লাঠি খেলা গ্রামীণ ঐতিহ্যের একটি অংশ। পৌর পার্কে তিন দিনবাপী উন্নয়ন মেলায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে ও বাড়তি আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে। তাদের চিত্ত বিনোদন দিতে ও ঐতিহ্যবাহী খেলাটি টিকিয়ে রাখতেই এ আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, ১২ জানুয়ারি, ২০১৮
আরএ