ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কেবল বাংলা ভাষা নয়, বর্ণও মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮
কেবল বাংলা ভাষা নয়, বর্ণও মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: অতীতের বিভিন্ন সময়ে বাংলা ভাষার ওপর শাসকগোষ্ঠীর খগড় নেমে এসেছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কেবল বাংলা ভাষা নয়, বাংলা অক্ষরও মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। বারবার ভাষার ওপর আক্রমণ এসেছে। কিন্তু সবগুলো আক্রমণই প্রতিহত হয়েছে।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। ‘বিশ্বমানব হবি যদি কায়মনে বাঙালি হ’ শীর্ষক স্লোগানে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বসছে তিন দিনব্যাপী এ সাহিত্য সম্মেলন।

এতে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের তিন শতাধিক কবি-লেখক-সাহিত্যিক-সমালোচক অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।

ভাষা আন্দোলনের সূচনার মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতি স্বাধীনতা লাভ করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশের পথ বেয়েই বাঙালি জাতি মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২১ ফেব্রুয়ারিকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করে। মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছিল। আমরা এর জন্য ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা বাংলা ভাষাকে কেড়ে নেওয়ার জন্য নানাভাবে বাধা দিয়েছে। কেবল বাংলা ভাষা নয়, বাংলা অক্ষরও মুছে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। রবীন্দ্রনাথ পড়া যাবে না বলে সমন জারি করে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসকরা। এরপর আঘাত আসে নজরুলের ওপর। তার কবিতায় সাম্প্রদায়িক পরিবর্তন আনার অপচেষ্টা হয়। বাংলা সাহিত্যকে কলুষিত করার চেষ্টা করা হয়। বারবার ভাষার ওপর আক্রমণ এসেছে। কিন্তু সবগুলো আক্রমণই প্রতিহত হয়েছে। এসব বাধা জয় করেই আমরা বাংলা ভাষা পেয়েছি।  

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার মর্যাদারক্ষায় যারা রক্ত দিয়েছেন তাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনেস্কো বাংলা ভাষার সম্মানে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশের মাতৃভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। এই মাতৃভাষা যেন হারিয়ে না যায়, তার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট গড়ার কাজ শুরু করি। এখানে ভাষাকে জানা, বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষণা করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। আমিও যতবার ভাষণ দিয়েছি, ততবারই বাংলায় দিয়েছি।

সাহিত্য মানুষকে অন্যায়ের বিরদ্ধে লড়াই করতে শেখায় এবং মানুষকে সমৃদ্ধ করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে দেশের ভাষা যত সমৃদ্ধ, সে দেশের মানুষ তত এগিয়ে। বাংলাদেশিরা কারও কাছে মাথা নত করে না। বাংলা ভাষা আমাদের আত্মপরিচয়ের ঠিকানা। উপমহাদেশে একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র এই বাংলাদেশই।

বাংলা সাহিত্যের মর্যাদা ও সম্মান বিশ্ব দরবারে বেড়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাহিত্য আগের চেয়ে আরও গতিশীল ও সহজ হয়েছে। আজকের এই আয়োজন বাংলা সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে। যারা বাংলায় সাহিত্যচর্চা করছেন তাদের একত্রে করার এই চেষ্টাকে আমি সাধুবাদ জানাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৩, ২০১৮/আপডেট ১৬৩৭ ঘণ্টা
আরআর/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।