সম্প্রতি বাংলানিউজকে একথা জানিয়েছেন তিনি। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ৫৭ বছর আগে অক্সফোর্ড মিশনের একজন কর্মী হিসেবে ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাংলাদেশে এসেছিলেন।
‘যুদ্ধাহতদের সেবা শুশ্রুষা করেছেন জীবনের মায়া ত্যাগ করে। আবার যখন দেশ স্বাধীন হলো, তখনও ছেড়ে যাননি বাংলাদেশকে। তিনি শুধু এ দেশে থেকে যাননি, ভালোবেসেছেন এখানকার মানুষকেও। তাই তো জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এখানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এরকম একজন মানুষের বরিশালের মাটির ও মানুষের প্রতি আলাদা একটি টান রয়েছে। ’
তিনি বলেন, বরিশালের জেলা প্রশাসক হিসেবে তার অনুভূতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি। মুক্তিযুদ্ধের জন্য এবং মুক্তিযুদ্ধে আহতদের যে সেবা শুশ্রুষা করেছেন সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। এই প্রেক্ষাপটে লুসি হল্ট যাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পান, দ্বৈত নাগরিকত্বের সুবিধা লাভ করেন সে চেষ্টা করা হচ্ছে।
‘অল্প কিছু দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিকত্বের আইনগত সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটেন একটি। একটি আবেদন এরই মধ্যে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। অচিরেই সার্বিক বিষয় উল্লেখ করে সরকারের কাছে পত্র লেখা হবে, যাতে বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। ’
তিনি বলেন, আশাকরি আগামী ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের আগেই বাংলাদেশপ্রেমী ব্রিটিশ নাগরিকের নাগরিকত্বের বিষয়টির সুরাহা হবে।
১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম নেওয়া লুসির বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। ১৯৪৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করা লুসির বড় বোন রুট অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে ব্রিটেনেই বসবাস করেন।
লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন এবং যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। কর্মজীবন থেকে ২০০৪ সালে অবসরে যাওয়া লুসি এখনও দুস্থ শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি শিশুদের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করছেন।
৫৭ বছর ধরে এদেশে থেকে বরিশাল ছাড়াও যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে কাজ করেছেন তিনি। জীবনের দীর্ঘ সময় এখানে কাটিয়েছেন, চিরনিদ্রায় শায়িতও হতে চান এই বাংলার মাটিতেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমএস/এমএ