গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা। সবমিলিয়ে এদেশে এখন আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখেরও বেশি।
এই প্রাণঘাতী রোগ ঠেকাতে তৎপর হু’র বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা বলেন, ডিপথেরিয়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। রোহিঙ্গা শিবির ও আশপাশের এলাকায় শিশুদের মধ্যে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের, বিশেষ করে শিশুদের এ ধরনের রোগ থেকে সুরক্ষায় স্বাস্থ্য খাতের সংস্থাগুলোর প্রত্যয়ের পুনরাবৃত্তি প্রকাশ পাচ্ছে।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) হু ও ইউনিসেফের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচিতে ৬ থেকে ৭ বছর বয়সী দেড় লাখ শিশুকে পেন্টাভালেন্ট ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে, আর ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সী এক লাখ ৬৬ হাজার শিশুকে দেওয়া হয়েছে টেটেনাস ও ডিপথেরিয়া ভ্যাকসিন। এক মাসের বিরতি দিয়ে আরও দুই দফায় রোহিঙ্গা শিবির ও আশপাশের এলাকার সব শিশুকে এই ডিপথেরিয়া-সংক্রান্ত ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এডোয়ার্ড বেইগবেডার বলেন, ডিপথেরিয়ায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে শিশুরা। সেজন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা রোহিঙ্গা শিবিরের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শিশুদের ভ্যাকসিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন। একেবারে স্বল্প সময়ের মধ্যে আকস্মিক এই রোগ ছড়িয়ে পড়ায় অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবাও ব্যাহত হচ্ছে। পরিস্থিতি সামলাতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এই ভ্যাকসিন রোগটির ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কাজ করবে বলে আমরা মনে করি।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ডিপথেরিয়া ঠেকাতে আগামী ছয় মাসের জন্য হু তার জরুরি তহবিল থেকে দেড় কোটি ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। সর্বোচ্চ সহায়তা দিয়ে কাজ করছে ইউনিসেফসহ অন্যান্য সংস্থাও।
ডিপথেরিয়ায় সাধারণত শিশুরা আক্রান্ত হলেও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যেও এ রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন লোকদের ক্ষত স্থান, চোখের কনজাংটিভা, জননাঙ্গ ইত্যাদি আক্রান্ত হতে পারে ডিপথেরিয়ায়৷ সংক্রামক এ রোগ শ্বাসতন্ত্রে দেখা দিলে শ্বাসকষ্ট হয়, এমনকি রোগীর দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুও হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এইচএ/