যেসব পার্ক ও খেলার মাঠে কাজ চলছে সেখানেও নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে। এছাড়া রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ পান্থকুঞ্জ পার্কের এখন পর্যন্ত নকশার কাজই শেষ করতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন।
এর আগে ২০১৬ সালের ৫ ডিসেম্বর ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি পার্ক ও খেলার মাঠকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত করে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন মেয়র সাঈদ খোকন। ওই দিন নগর ভবনে এক মতবিনিময় সভায় ২০১৭ সালের মধ্যে এই আধুনিকায়নের কাজ শেষ হবে বলেও জানিয়েছিলেন মেয়র।
এরপর থেকে বহু উদ্যোগ নেওয়া হলেও ২০১৭ সাল গড়িয়ে ২০১৮ সালের শুরুতে সর্বশেষ তথ্য মতে ৩০টি পার্কের কাজের টেন্ডার হয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটির কাজ চলমান রয়েছে। তবে সরকারি অন্য প্রজেক্টের জটিলতায় পান্থকুঞ্জ পার্কের টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি এখনো দিতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর মতিঝিল শহীদ মতিউর রহমান পার্ক, গুলিস্থান মহানগর নাট্যমঞ্চ সংলগ্ন পার্ক এবং বাসাবো খেলার মাঠ সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে সেখানে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে। এ তিনটি কাজের টেন্ডার পেয়েছে এমএস আলী অ্যান্ড টি রহমান নামে একটি জয়েন্ট ভেঞ্চার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
১৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের অধীনে মতিঝিল শহীদ মতিউর রহমান পার্কে একটি ফোয়ারা, আধুনিক পাবলিক টয়লেট এবং সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। মহানগর নাট্যমঞ্চ সংলগ্ন পার্কে লাইটিং, একটি আধুনিক জিমনেশিয়াম, পাবলিক টয়লেটসহ আরো কিছু কাজসহ বাসাবো খেলার মাঠ আধুনিকায়ন করা হবে।
তবে এই কাজ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নান বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, বাসাবো খেলার মাঠে প্রজেক্ট সামারির সাইনবোর্ড লাগানোর পর থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন পক্ষ থেকে চাঁদা দাবি করা হচ্ছে। একইভাবে মতিঝিল পার্কের মধ্যে একটি পাবলিক টয়লেট রয়েছে। ওই টয়লেট বন্ধ না হলে নতুন করে কাজ করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, আমরা ওই টয়লেটটি বন্ধের দাবি করলে সেখানে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বাধা হয়ে দাঁড়ান। তারা বলেন, এটা নাকি তাদের লিজ নেওয়া। বিষয়টি আমরা সিটি কর্পোরেশনকেও জানিয়েছি।
এসব কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা ‘এমএস আলী অ্যান্ড টি রহমান’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা খাইরুদ্দিন জুয়েল বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশে মানুষের সচেতনতার খুবই অভাব। বাইরের দেশে প্রতিটি মোড়ে ছোট ছোট পার্ক রয়েছে। সেগুলো দেখলে বসতে মন চায়। আর আমরা কাজ করতে গেলেও বাধা আবার একটা পার্ক সাজানোর পরে কয়েক মাসের মধ্যে তা আর দেখার মতো থাকে না। মানুষ বুঝতেই চায় না এটা তাদের জন্যই করা হচ্ছে। আমাদের সচেতন হতে হবে, না হলে যতই কাজ হোক তা টিকবে না।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ৩০টি পার্কের কাজ চলমান রয়েছে। যা আগামী জুনের মধ্যে শেষ হবে। এছাড়া পান্থকুঞ্জ নিয়ে আরো কিছু প্রজেক্টের জটিলতা থাকায় নকশার কাজে দেরি হয়েছে। তবে চলতি মাসের মধ্যে নকশা এবং পরের মাসে টেন্ডার হয়ে যাবে।
চলমান কাজে বাধার বিষয়ে তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশন স্থাপনা ইজারা দিলেও প্রয়োজনে তা আবার ফিরিয়ে নিতে পারে। চলমান সমস্যা নিয়ে আমাদের বিভিন্ন পক্ষ কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এসআইজে/এমজেএফ