আলোচিত এ মামলায় সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
পঞ্চম দফায় প্রথমে মামলার সাক্ষী লিটন মিয়া, পরে মো. হযরত আলী ও রুবেল মিয়া সাক্ষ্য দেন।
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আখতার জানান, সোমবার পৌনে ১২টায় টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে সকাল পৌনে ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত।
মঙ্গলবার বাকী সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক।
এর আগে আদালতে চতুর্থ দফায় গত মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) মোট তিনজন সাক্ষ্য দেন। এদিন প্রথমে সাক্ষ্য দেন নিহত রূপার ভাই হাফিজুর রহমান প্রামাণিক, আব্দুল বারেক ও মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
গত ৩ জানুয়ারি সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি সাক্ষ্য দেন চার সাক্ষী। তারা হচ্ছেন আব্দুর রশিদ, মামলার বাদী প্রবীন এন কুমার, মো. আবুল হোসেন ও মো. রহিজ উদ্দিন। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য দেন আরো চারজন। তারা হচ্ছেন এমএ রৌফ, মো. ইমান আলী, মো. হাসমত আলী ও মো. লাল মিয়া।
বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আখতার আরো জানান, এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ছোঁয়া পরিবহনের সহকারী শামীম (২৬), আকরাম (৩৫), জাহাঙ্গীর (১৯), চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯ এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। চার্জশিটে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ-ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তা করছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা হচ্ছেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. দেলোয়ার হোসেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম, আকরাম, জাহাঙ্গীর, চালক হাবিবুর ও সুপারভাইজার সফর আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতে হাজির করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৮
আরএ