মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার এক জনাকীর্ণ আদালতে ফাঁসির এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- পাবনা সদর থানার গোপালপুর এলাকার গোলাম মোহাম্মদের মেয়ে কুলসুম নাহার ওরফে বিউটি (৪৬), একই জেলার আতাইকুলা উপজেলার রাণীনগর গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে রুহুল আমিন (৪৭) এবং একই গ্রামের মৃত ইয়াসিন মোল্লার ছেলে সোলেমান আলী (৪৫)।
বিউটির স্বামী মোশাররফ হোসেন ওরফে খোকন মৃধাকে (৫০) শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগে তাদের এ সাজা দেওয়া হলো। নিহত মোশাররফ পাবনা সদর থানার টেকনিক্যাল মোড়ের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে।
রায় ঘোষণার সময় বিউটি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি দুই আসামি ঘটনার পর গ্রেফতার হলেও পরে জামিন নিয়ে আত্মগোপনে আছেন।
মামলা দায়ের পর তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত বিউটিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানান, টাকার ওপরে মোবাইল নম্বর পেয়ে এক ছেলে ও দুই মেয়ের মা বিউটির সঙ্গে কথা শুরু করেন রুহুল আমিন। পরে তাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক হয়। এক বছর ধরে চলা এ পরকীয়া সম্পর্কের জেরে তারা অবৈধ শারীরিক সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তারা মোশাররফকে তাদের ‘পথের কাটা’ মনে করেন। তাই তারা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১১ সালের ৩০ জুন রাতে বিউটির পরকীয়া প্রেমিক রুহুল আমিন তার বন্ধু সোলেমান আলীকে নিয়ে পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া মহল্লায় মোশাররফের ভাড়া বাসায় যান। পরে তারা মোশাররফের ঘরে লুকিয়ে থাকেন। মোশাররফ বাসায় ফিরলে গভীর রাতে তারা তিনজন মিলে মোশারফকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর গুম করতে মরদেহ একটি বস্তার ভেতর ঢোকানো হয়। কিন্তু এরই মধ্যে প্রতিবেশীরা বিষয়টি টের পেলে রুহুল আমিন ও সোলেমান আলী পালিয়ে যান। পরে ওই রাতেই পাবনা সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোশারফের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় তার স্ত্রী বিউটিকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন থানায় মামলা হয়।
পিপি এন্তাজুল হক আরও জানান, এ মামলার বিচারকাজ চলাকালে আদালতে মোট ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন রাজশাহী বারের অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান রুমন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এসএস/আরআইএস/