মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌনে ৪ টায় বরিশাল নগরের রূপাতলীর র্যাব-৮ এর সদর দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে এ তিন বাহিনীর সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৮ এর উপ পরিচালক মেজর সোহেল রানা প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জে র্যাবের বিশেষ অভিযানে জলদস্যু ‘বড় ভাই’ বাহিনীর প্রধান মো. আব্দুল ওয়াহিদ মোল্লা, ভাই ভাই বাহিনীর প্রধান মো. ফারুক মোড়ল ও সুমন বাহিনীর প্রধান মো. জামাল শরিফ সুমনসহ ৩৮ সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ‘বড়ভাই’ বাহিনীর বাচ্চু শেখ (৩৫), মাহামুদ হাসান (২৩), মো. রফিকুল ইসলাম (৪২), ওলি ইজারাদার (৩১), গোলাম মাওলা (৫০), অলিয়ার শেখ (৫০), বরকত আলী শেখ (৫০), রেজাউল মোল্লা (৪৫), রিপন শেখ (৩১), খালিদ ইজারাদার (৪০), মিকাইল ইজারাদার (৩১), বায়েজিদ মোল্লা (৩৪), লিটন আলী ইজারাদার (৩১), মাজেদ ইজারাদার (৫০), এসএম মেহেদি হাসান মিলন (৩১), আব্দুল মজিদ ভাঙ্গী (৫৫), ইউনুস আলীসহ (৩২) মোট ১৮ সদস্য।
‘ভাই ভাই’ বাহিনীর রেজাউল সানা (৫০), অনিমেষ বাড়ৈ (২৪), কুতুব উদ্দিন গাজী (৩০), ইমদাদুল হক (২৮), আলমগীর হাওলাদার (৩২), আলামিন হাওলাদার (৩০), হাবিবুর রহমান সিকদারসহ (৩২) আট সদস্য।
‘সুমন’ বাহিনীর কাইয়ুম জোমাদ্দার (২৯), আলামিন মৃধা (৪০), জামাল তালুকদার (৩৫), রাজা ফরাজি (২৫), আলামিন খাঁ (২৫), মো. রফিকুল (৪১), আকরাম হোসেন গাজী (৩১), জুয়েল রানা (৩০), আবুল কালাম শেখ (৬০), মিলন হাওলাদার (২২), ছমির তালুকদারসহ (৪৫) মোট ১২ সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে।
আত্মসমর্পণকারীরা সবাই খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার বাসিন্দা। এদের কাছ থেকে দেশি-বিদেশি ৩৮ টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং সকল প্রকার অস্ত্রের ২ হাজার ৯৬৯ রাউন্ড বিভিন্ন ধরনের গোলাবাররুদ উদ্ধার করা হয়।
এর মধ্যে ১৪ টি বিদেশি একনালা ও ৯ টি দোনালা বন্দুক, ৩ টি পয়েন্ট ২২ বোর বিদেশি রাইফেল, ৬ টি বিদেশি এয়ারগান, ৫ টি পাইপগান ও ১ টি বিদেশি কাটা রাইফেল রয়েছে।
মেজর সোহেল রানা প্রিন্স জানান, ‘বড় ভাই, ভাই ভাই ও সুমন’ বাহিনী সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের মংলা, শ্যালাগাং, হারবাড়িয়া, ভদ্রা, পশুর নদী এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন উপকূলবর্তী অঞ্চলে সক্রিয় জলদস্যু বাহিনী।
এসব অঞ্চলের বনজীবী ও জলজীবী সাধারণ মানুষ তাদের টার্গেট ছিলো। বিভিন্ন জলদস্যু/ডাকাত বাহিনী র্যাবের হাতে নিস্ক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি, র্যাব-৮ এর ক্রমাগত একাধিক কঠোর অভিযানের কারণে কোনঠাসা হয়ে আতংকিত হয়ে পড়ায় তারা অনুধাবন করে অধিক অর্থ উপার্জন ও প্ররোচণার স্বীকার হয়ে তারা ভুল পথে পরিচালিত হয়েছিলো।
১৯৯৫ সালে ‘বড়ভাই’ বাহিনী ও ২০০৮ সাল থেকে ‘ভাইভাই’ বাহিনী ও ২০১০ সালে ‘সুমন’ বাহিনী সুন্দরবনে জলদস্যুবৃত্তি করছিলো।
জলদস্যু আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে র্যার ৮ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার হাসান ইমন আল রাজীবের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১৮
এমএস/ওএইচ/