শুধু তারাই নয়, দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী আমাদের দেশের সব ছিন্নমূল মানুষকে সেই শব্দটি তিরস্কার করছে।
বাইক্কা বিলের খানাখন্দে ভরা পথ চলে গেছে বহুদূরে।
সেই পথের এক অংশে একটি জরাজীর্ণ কুঁড়েঘর। এক মধ্যবয়সী নারী সেই ঘরের পাশে বসে নলখাগড়ার লাঠির মতো শুকনো অংশগুলোতে আপন মনে গোবর লাগাচ্ছেন। এ যেন দারিদ্র্যপীড়িত জীবনের দায়ভার।
কি নাম? জিজ্ঞেস করতেই উত্তর এলো ‘পিয়ারা বেগম’। স্বামীর নাম জিজ্ঞেস করতেই পিয়ারা বেগম আর কথা বললেন না। একদম চুপচাপ হয়ে গেছেন। চুপশে গেছেন নিজের মতো করে। পর মুহুর্তেই পাশে থাকে একজন বললেন, গ্রামের মহিলারা স্বামীর নাম মুখে নেন না।
তাহলে উনার স্বামীর নামটা কি? মনে মনে এই জিজ্ঞাসাটি নীরব প্রশ্ন হলো। পুকুর ডিঙিয়ে অন্য পার থেকে একজন বেশ উচুস্বরে উত্তর দিলেন, ‘মজনু মিয়া’।
কী করছেন? জানতে চাইলে পিয়ারা বেগম বলেন, গোবরের মুঠি বানাচ্ছি। এগুলো চুলায় জ্বালাবো। আমার তো আর লাকড়ি-বাঁশ কেনার ক্ষমতা নাই। তাই এগুলোই একমাত্র ভরসা।
পিয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামী হাঁটতে পারেন না। বিছানায় শুয়ে থাকেন সারাদিন। টাকা-পয়সার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারি না।
পাঁচদিন পর পর পঞ্চাশ-একশটা করে বানাই এই গোবরমুঠি। তা দিয়ে রান্নার কাজটা কোনো রকম চলে- বলেন পিয়ারা বেগম।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৯ ঘণ্টা, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮
বিবিবি/আরআর