ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

৪ মাসের মধ্যেই মেট্রোরেল স্প্যান বসছে আগারগাঁওয়ে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
৪ মাসের মধ্যেই মেট্রোরেল স্প্যান বসছে আগারগাঁওয়ে ঢাকায় চলবে এমন মেট্রোরেল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দু’টি স্প্যান (সুপার স্ট্রাকচার) পিলারের ওপর বসানোর ফলে উত্তাল পদ্মার বুকে দৃশ্যমান প্রায় ৩০০ মিটার স্বপ্নের পদ্মাসেতু।এই অগ্রগতিতে দেশবাসীর আশাবাদ বেড়ে গেছে আরও। সরকার এই আশাবাদ প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে ঢাকার মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যাপারেও।

জনগণের চোখে মেট্রোরেল দৃশ্যমান করতে ৩-৪ মাসের মধ্যেই স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিডিপি) বা মেট্রোরেল প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই পরিকল্পনার কথা জানা গেছে।

উত্তরা থেকে মিরপুর, ফার্মগেট, শাহবাগ হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথের যাত্রীদের যাতায়াত দ্রুত ও সহজ করতে ২০১৯-২০২০ মেয়াদে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা।

প্রকল্পের প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শেষ করে আসার কথা। কিন্তু দেশবাসীকে প্রকল্পের কাজ জানান দিতে আগারগাঁওয়েই প্রথমে স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মেট্রোরেল আর স্বপ্ন নয়, এটা বাস্তবায়ন এখন সময়ের ব্যাপার। বিষয়টি দেশবাসীকে জানান দিতে আগারগাঁও ৯ নম্বর স্টেশনের সামনে দু’টি স্প্যান বসানো হবে। প্রতিটা স্প্যানের দৈর্ঘ্য হবে ৩০ মিটার। যেন রাজধানীর মানুষ এই উন্নয়ন কাজ দেখতে পারে, সেজন্য দিয়াবাড়ির পরিবর্তে আগারগাঁও এলাকায় প্রথমে স্প্যান বসানো হবে।  
 
সূত্র মতে, উত্তরা তৃতীয় পর্ব (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার অংশ ২০১৯ সালের মধ্যেই উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যে আট প্যাকেজে ভাগ করে কাজ চলছে, এই অংশটুকু প্যাকেজ-৩ ও প্যাকেজ-৪-এর অংশ। সেজন্য প্রকল্পের এই অংশটির কাজই ধরা হয়েছে আগে।

আগারগাঁওয়ে মেট্রোরেলের স্প্যান বসানো প্রসঙ্গে এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, দিয়াবাড়ি থেকে স্প্যান বসানোর কাজ হওয়ার কথা ছিলো। এটা পরিবর্তন করে বিশেষ উদ্যোগে আগারগাঁও এলাকায় আগামী তিন মাসের মধ্যেই স্প্যান বসানো হবে। তাহলে হাজার হাজার মানুষ এই স্প্যান দেখবে। এতে করে পুরো দেশবাসীর মধ্যে একটা আস্থা সৃষ্টি হবে মেট্রোরেল প্রকল্পের বিষয়ে।

প্রকল্পের কাজ অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা তৃতীয় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল খুলে দেওয়া হবে। আর ২০২০ সালের মধ্যে চালু করা হবে মতিঝিল পর্যন্ত।

যে এলাকায় স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা চলছে, অর্থাৎ উত্তরা নর্থ থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত, সেখানে এখন ভায়াডাক্ট ও স্টেশন নির্মাণ কাজ চলছে। এতে ব্যয় হচ্ছে চার হাজার ২৩০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এই প্যাকেজের আর্থিক অগ্রগতি ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ। সম্পন্ন হয়েছে নয়টি টেস্ট পাইল। মূল পাইলও নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বরে।  

অগ্রগতির বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, এরইমধ্যে ৯০টি মূল পাইল নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এক হাজার ৫৯৫ কোটি টাকায় শুরু হয়েছে ডিপো এলাকার কাজ। বর্তমানে সাইট অফিসের নির্মাণকাজ ও ডিপোর অভ্যন্তরে চেক বোরিং এবং টেস্ট পাইল নির্মাণের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে ডিএমআরটিডিপি’র প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) আব্দুল বাকী মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমে আগারগাঁও এলাকায় মেট্রোরেলের স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছি। সেই মোতাবেক আমরা কাজ করছি।
 
ঢাকাবাসীর বহুল প্রত্যাশিত মেট্রোরেলের স্টেশন সংখ্যা মোট ১৬টি। এগুলো হচ্ছে- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব এবং মতিঝিল।

রুটের মোট দৈর্ঘ্য ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। রোলিং স্টক ২৪ সেট। প্রতি সেটে ছয়টি করে কার থাকবে। ঘণ্টায় গতিবেগ ১০০ কিলোমিটার। আর যাত্রী পরিবহন করবে ৬০ হাজার।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এমআইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।