ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পোল্ট্রি ফিডে বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্য

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
পোল্ট্রি ফিডে বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্য আলোচনা সভা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: পোল্ট্রি ও মাছের খাবারের পাওয়া যাচ্ছে বিষাক্ত ট্যানারির বর্জ্য। চামড়ার বর্জ্যে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষতিকর উপাদান। এসব বর্জ্য দিয়ে মাছ ও মুরগির খাবার তৈরি হচ্ছে, আর এই খাবার খাওয়ানোর ফলে মাছ ও মুরগির শরীর হচ্ছে বিষাক্ত। মাছ-মুরগি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রিয় খাবার হিসেবে আমরা গ্রহণ করছি। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভয়ংকর। এমনটাই দাবি করছে বাংলাদেশ পরিবেশবাদী আন্দোলন (বাপা)।

বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাপা ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ আয়োজিত 'পোল্ট্রি ফিডে বিষাক্ত ট্যানারি বর্জ্য; গভীর সংকটে জনস্বাস্থ্য! মুক্তির উপায় কি?' শীর্ষক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।

বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খানের সভাপতিত্বে সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক জাহেদুর রহমান।

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এম আব্দুল মমিন, পশুসম্পদ ও পোল্ট্রি ফিড বিশেষজ্ঞ বিধান চন্দ্র দাস, সৈয়দ সাইফুল আলম শোভন, গাউস পিয়ারীসহ আরও অনেকে।

বক্তারা বলেন, চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কমপক্ষে শতাধিক ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। চামড়া ফিনিশিং প্রক্রিয়ার শেষ স্তর পর্যন্ত কমপক্ষে ২০ ধরনের কেমিকেল ব্যবহার করা হয়। পোল্ট্রি ফিডের কাঁচামাল আমদানি করা অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় বিকল্প হিসেবে এ ট্যানারি বর্জ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া এসব কেমিকেলের মাধ্যমে পোল্ট্রি মাছ-মুরগি-কে স্বাস্থ্যবান করার প্রক্রিয়া চলছে এসব খাবারের মাধ্যমে। যে কারণে এই প্রক্রিয়ায় পোল্ট্রি ফিড উৎপন্ন করা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আগে হাজারীবাগের বিভিন্ন স্থানে এই অপকর্ম হতো এখন সাভারের ভাকুর্তার মোগড়াকান্দির চকে বিষাক্ত ট্যানারির বর্জ্য থেকে এ খাবার তৈরি হচ্ছে।

বক্তারা আরো বলেন, যেসব এলাকায় এ খাবার যাচ্ছে সে এলাকার মুরগির ডিম সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্রোমিয়াম নামক রাসায়নিক পদার্থ ধরা পড়েছে। যার কোনো দাহ্যতা নেই। আর এ রাসায়ানিক পদার্থ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ধ্বংস করছে কিডনি, সৃষ্টি করছে থ্রম্বোসিস, করোনারি ডিসঅর্ডার, ইডিমাসহ ক্যানসারের মতো কঠিন সব রোগ।

সরকারি নজরদারি একেবারে নেই বললেই চলে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ট্যানারির বর্জ্য বাইরে বের হওয়ার কথা নয়। এছাড়া এ বর্জ‍্যের বিষয়ে ২০১১ সালের ২১ জুলাই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের সমন্বয়ে তৎকালীন একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ এক মাসের মধ্যে এ বর্জ্য থেকে মাছ মুরগির খাবার তৈরির কারখানা বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রশাসন কারখানাগুলো বন্ধের বা রায় কার্যকরের‌ কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সেখানে বর্তমানে ২০টি কারখানা রয়েছে।

আর এই অবস্থা চলমান থাকলে সারাদেশের জনস্বাস্থ‍্য চরম হুমকির মধ্যে পড়বে এবং সে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বক্তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এমএএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।