মার্চের ২৬-৩১তম দিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য এখন পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা আছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ আমাদের জন্য বড় ঘটনা।
ফ্রান্সের থ্যালাস এলিনিয়া স্পেসের কারখানায় তৈরি স্যাটেলাইটটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের কেপ ক্যানাভেরাল থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। গত বছরের ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও ফ্লোরিডায় ‘ইরমা’ ঝড়ের কারণে সূচি পিছিয়ে যায়।
মন্ত্রণালয়ের নথি থেকে জানা যায়, ৭০ শতাংশ স্যাটেলাইটের ক্ষেত্রে উৎক্ষেপণের সময় সামান্য যান্ত্রিক ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে যথাসময়ে উৎক্ষেপণ সম্ভব হয় না। অধিকাংশ সময়ই নতুন করে ৮-১০ ঘণ্টা সময় নিয়ে উৎক্ষেপণ করতে হয়।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় উৎক্ষেপণের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াও দেশে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে হবে মূল অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকবেন ওই অনুষ্ঠানে।
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণ বাংলায় হলেও আরবি, ইংরেজি, ফরাসি ও রাশিয়ান ভাষায় সাব-টাইটেল প্রস্তুত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ জানায়, ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী দিনে অনুষ্ঠিত হলে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরপরই দেশব্যাপী বেলুন ওড়ানোর আয়োজন এবং একই দিন সন্ধ্যায় আতশবাজি প্রদর্শনী হবে। আর যদি বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা বা রাতে উৎক্ষেপণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়, সেক্ষেত্রে বেলুন ওড়ানো হবে না। শুধু আতশবাজি প্রদর্শনী হবে।
একজন কর্মকর্তা জানান, সব বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং ঢাকা শহরের অনুষ্ঠানস্থলসহ হাতিরঝিল, উত্তরা রাজউক স্কুল, স্টেডিয়াম, আহসান মঞ্জিল, কাচপুর ব্রিজে আতশবাজি প্রদর্শন করা হবে।
এছাড়া দেশের প্রথম এই স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ কার্যক্রম প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার ছাড়াও বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে অভিজ্ঞ এবং প্রথিতযশা ব্যক্তিদের দিয়ে টকশো’র আয়োজন করবে টেলিযোগাযোগ বিভাগ।
ফ্লোরিডায় উৎক্ষেপণ অনুষ্ঠান আয়োজনে বিটিআরসি সার্বিক দায়িত্ব পালন করবে বলে জানায় মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা থাকবে।
অনুষ্ঠান আয়োজনে আনুমানিক ১৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। তবে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হলে বিটিআরসি থেকে সহায়তা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে কোনো স্পন্সর নেওয়া সমীচীন হবে না বলে জানায় টেলিযোগাযোগ বিভাগ। দরপত্র আহ্বান করে আতশবাজি, প্রচারণা ও অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনা তথা সাজসজ্জার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ উপলক্ষে একটি স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশের উদ্যোগ নেবে ডাক অধিদফতর।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। এটি একটি বাণিজ্যিক এবং আলাদাভাবে স্পট থেকে তৈরি হওয়া নিজস্ব স্যাটেলাইট। বাংলাদেশকে সার্ভিস দেওয়ার জন্য আলাদাভাবে ২০টি ট্রান্সপন্ডার রাখা হয়েছে। নিজস্ব স্যাটেলাইট না থাকায় বর্তমানে দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট এবং রেডিও স্টেশনগুলো বিদেশি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এতে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক অর্থ ব্যয় হয়। নিজস্ব স্যাটেলাইট চালু হলে ভাড়া বাবদ অর্থ সাশ্রয়ের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে বলে জানিয়েছে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৮
এমআইএইচ/এএ