ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় দেয়াল ধসে শ্রমিকের মৃত্যু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৮
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় দেয়াল ধসে শ্রমিকের মৃত্যু ধসে পড়া দেয়াল-ছবি-শাকিল আহমেদ

ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন ফুটপাতের ধসে পড়া দেয়ালটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দেয়ালটি ধসে মোস্তফা নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার জন্য স্থানীয়রা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের অবহেলাকে দায়ী করছেন।

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, দুর্ঘটনাস্থলে যে কাজ চলছিলো সেটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেখানে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো না। শ্রমিকরা পর্যাপ্ত দক্ষ নয় বলেও দাবি করে তারা।


 
সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে সিভিল এভিয়েশনের ড্রেন সংস্কার ও দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছিল।  
 
সরেজমিনে দেখা গেছে, ধসে পড়া দেয়ালটি প্রায় আড়াই ফুট উচ্চতার ফুটপাতের কংক্রিটের দেয়াল। এটি কোনো সীমানা প্রাচীর নয়। তবে ফুটপাতের এই দেয়াল ঘেঁষেই ড্রেন নির্মাণের জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। ফলে এর গোড়ায় মাটি না থাকায় দেয়ালটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। তবে দেয়ালটি যাতে ভেঙে না পড়ে তার জন্য নিরাপত্তামূলক কোনো ব্যবস্থা সেখানে ছিলো না।
 
একইসঙ্গে ড্রেন সংস্কারের জন্য রাস্তার যে অংশ খোঁড়া হয়েছে সেখানে ওয়াসার পানির লাইন এবং সুয়ারেজের গ্যাসের লাইন রয়েছে। ফলে এলাকাটি আগে থেকেই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো বলে মনে করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
 
এদিকে এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ করার জন্য যেমন দক্ষ শ্রমিক ও সেফটির দরকার তার কোনটাই ছিলো না বলে জানিয়েছেন কুর্মিটোলা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুল মান্নান। উদ্ধারকাজ শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
 
আব্দুল মান্নান বলেন, এ ধরনের কাজ করার জন্য আমাদের দেশের শ্রমিকদের যে ধরনের দক্ষতা ও সেফটি থাকা দরকার তেমন দক্ষ তারা ছিলো না। আমরা বলি সেফটি ফাস্ট, সেফটি মাস্ট। সেফটি ছাড়া এ ধরনের কাজ করা ঠিক না। সেফটি থাকলে দুর্ঘটনা ঘটলেও ক্ষতি কম হয়।
 
তিনি বলেন, এখানে সেফটি ছিলো না। যে কনস্ট্রাকশন ফার্ম এই কাজ করছে তাদেরই সেফটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিলো।
 
মান্নান বলেন, এখানে গ্যাসের লাইন ছিলো, পানির লাইন ছিলো। উদ্ধার কাজের সময় পানির লাইন থেকে প্রচুর পানি বের হয়েছে। পরে আমরা একটি বাঁধ দিয়ে পানি সেচে উদ্ধার কাজ করেছি।
 
এদিকে ড্রেনের মধ্যের লাইন ফেটে সেখানে পানি ভর্তি থাকায় উদ্ধার কাজে দেরি হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাবুল হোসেন।
 
বাবুল বাংলানিউজকে বলেন, দেয়ালের গোড়ায় মাটি না থাকায় দেয়ালটি ভেঙে পড়ে। এসময় নিচে থাকা শ্রমিকরা চাপা পড়ে। আমরা যারা আশপাশে ছিলাম তারা ছুটে গিয়ে তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করি। কিন্ত দেয়ালটি কংক্রিটের হওয়ায় অনেক ভারী ছিলো। এছাড়া ড্রেনে পানি ছিলো কিছু দেখা যাচ্ছিলো না। এজন্য উদ্ধারে ৩০ মিনিটের মতো সময় লাগে। ততক্ষণে চাপা পড়া শ্রমিক মারা যান।
 
এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার মাকসুদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবো।  
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
এসআইজে/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।