দীর্ঘ ৬ বছরেরও বেশি সময় পর আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) প্রধানমন্ত্রী বরিশাল আসছেন। দেশের সরকারপ্রধানকে বরণ করে নিতেই বরিশালজুড়ে এতো আয়োজন।
সফরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায়। নগরের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে এসব সরকারি ও দলীয় কর্মসূচি হবে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দফায় দফায় বৈঠক সেরেছে। গোটা বরিশালের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম।
বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে দলীয় প্রধানের সফরকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়রা নেতারাও। বেশ আগে থেকেই তারা বিভাগের ৬ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে করেছেন প্রস্তুতিমূলক সভা।
সফর ও জনসভাকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন দেয়ালে দেয়ালে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার, গণসংযোগ চালিয়ে বিলি করা হয়েছে লিফলেট, আর এখন মাইকে প্রচারের পাশাপাশি করা হচ্ছে এলাকাভিত্তিক মিছিল।
গোটা বরিশালের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়সহ প্রধানমন্ত্রীর চলাচলের পথে নির্মাণ করা হয়েছে ২০টিরও বেশি দৃষ্টিনন্দন তোরণ ও নকশি করা ফটক। বিভিন্ন সড়কের পাশেও শোভা পাচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন। সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকাকে বসানো হয়েছে বাহারি সাজে।
ঢাকা থেকে আসা প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার যে অস্থায়ী হ্যালিপ্যাডে অবতরণ করবে, সেই শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত জেলা স্টেডিয়ামকে সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। স্টেডিয়ামের গ্যালারিগুলোও সাজানো হয়েছে লাল-সবুজ রঙয়ের ছোঁয়ায়। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু উদ্যান পর্যন্ত সড়কের পাশের প্রায় প্রতিটি দেয়ালে করা হয়েছে নতুন করে রঙ, যেখানে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা বর্ণিল সব নকশা। ফটুপাত-ডিভাইডারেও লেগেছে নতুন করে রঙয়ের ছোঁয়া। ওড়ানো হয়েছে বাহারি রঙয়ের নিশান।
বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভা মাঠে স্থাপন করা হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের একটি বিশাল বিলবোর্ড। মাঠের পূর্ব প্রান্তে তৈরি করা হচ্ছে জনসভার মঞ্চ। আর পশ্চিম প্রান্তে স্থাপন করা হয়েছে পদ্মাসেতুর মডেল। পুরো মাঠজুড়ে উড়ছে লাল-সবুজের ফিতে, মাঠের পাশের সড়ক ও লেকজুড়ে করা হয়েছে ঝলমলে আলোকসজ্জা। আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে ও মাঠে অস্থায়ী অবকাঠামোর উপর স্থাপন করা হয়েছে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক বহু নৌকা।
মাঠের পূর্ব প্রান্তের দক্ষিণ দিকে স্টিলের ফ্রেমে তৈরি বোর্ডে স্থাপন করা হচ্ছে বিভিন্ন দফতরের ৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৩৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক। এসবের উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সার্বক্ষণিক বরিশালে অবস্থান করে সার্বিক প্রস্তুতি তদারকি করছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাসহ সংসদ সদস্যরা। বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বাংলানিউজকে জানান, দক্ষিণাঞ্চল আওয়ামী লীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতির সবকিছুই শেষের দিকে। দলীয় নেতারা সার্বক্ষণিক সব বিষয় তদারকি করছেন।
আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর আগে বরিশালে প্রধানমন্ত্রীর আগমন অনেকটা অর্থবহ। বরিশালে তার আগমনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। তাই অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এবারের আয়োজন ব্যাপক।
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমএস/এইচএ/