বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে মো. আবদুল হামিদকে ফের নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপতি হিসেবে আবদুল হামিদের নির্বাচিত হওয়ার গেজেট বুধবারই প্রকাশিত হবে জানিয়ে সিইসি বলেন, গেজেট নিয়ে আমরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করতে যাবো।
গত ৩১ জানুয়ারি (বুধবার) রাতে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে মো. আবদুল হামিদকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র নেন মো. আবদুল হামিদ। তার পক্ষে সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ ওইদিন সকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদে দ্বিতীয় মেয়াদেও দায়িত্ব পেলেন হামিদ।
আবদুল হামিদ মোট তিনটি মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। প্রথম মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হয়েছেন ওবায়দুল কাদের, আর সমর্থক হয়েছেন তোফায়েল আহমেদ।
দ্বিতীয় মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হয়েছেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আর সমর্থক হয়েছেন চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ।
তৃতীয় মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবক হয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, যার সমর্থক হয়েছেন হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক। ফের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন আবদুল হামিদ
এগুলোর মধ্যে ওবায়দুল কাদেরের প্রস্তাবিত মনোনয়নটি বাছাইয়ে বৈধ হলে সেটিই গ্রহণ করা হয়। অবশিষ্ট দু’টি আর যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন পড়েনি বলেও জানান সিইসি।
আগামী ২৩ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে ফের শপথ নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন।
২০১৩ সালের ১৪ মার্চ রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন স্পিকার আবদুল হামিদ। ২০১৩ সালের ২০ মার্চ জিল্লুর রহমান মৃত্যুবরণ করলে সেদিন থেকে তিনি অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে ২৪ এপ্রিল দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন আবদুল হামিদ।
আবদুল হামিদের জন্ম ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার কামালপুর গ্রামে। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৫৯ সালে ছাত্রলীগে মো. আবদুল হামিদ
যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। ১৯৬১ সালে কলেজের ছাত্র থাকাকালেই তিনি যোগ দেন আইয়ুববিরোধী আন্দোলনে। এক পর্যায়ে তাকে কারাগারেও যেতে হয়।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১৮ আসন থেকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে তাকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়।
১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত হন আবদুল হামিদ। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় সংসদ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ, ১৯৯৬ সালের সপ্তম সংসদ, ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ এবং সবশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন।
সপ্তম সংসদে ১৯৯৬ সালের ১৩ জুলাই থেকে ২০০১ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালনের পর ২০০১ এর ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত স্পিকার হিসেবে সংসদ পরিচালনা করেন আবদুল হামিদ।
নবম সংসদে নির্বাচিত হওয়ার পর দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার হন তিনি।
** গেজেট প্রকাশ, রাষ্ট্রপতির সাক্ষাতে যাচ্ছেন সিইসি
বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৭/আপডেট: ১৩০২ ঘণ্টা
ইইউডি/জেডএস