ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৮
সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: বাংলাদেশকে শান্তিপ্রিয় দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কের মূলনীতি হলো, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। সেজন্য বিশ্বের প্রায় সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। 

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজে (ডিএসসিএসসি) এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।  

‘ডিএসসিএসসি ২০১৭-২০১৮ কোর্স’র গ্রাজুয়েটদের সনদ তুলে দিতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ১৩৬, নৌবাহিনীর নৌবাহিনীর ৪০ ও বিমান বাহিনীর ২২ গ্রাজুয়েটসহ বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বাহিনীর ২৬৬ অফিসারকে সনদ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের স্মরণ করেন। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোন, সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের।

তিনি গ্রাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে আজ আপনারা সমর বিজ্ঞানের ওপর উচ্চতর জ্ঞান লাভ করেছেন। আমার বিশ্বাস, এ প্রশিক্ষণ অর্পিত দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালনে এবং যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনাদের আরও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শেখাবে। শুধু তাই নয়, এখন থেকে আরও বড় পরিসরে নেতৃত্ব প্রদানে আপনারা নিজেদের প্রস্তুত রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের মূর্ত প্রতীক। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমাদের বৈদেশিক সম্পর্কের মূলনীতি হলো- সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। সেজন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।   সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) অনুষ্ঠানে অতিথিরা।  ছবি: পিআইডিসশস্ত্র বাহিনীর নানাবিধ কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবেলায়ও প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে আসছে।  

‘শুধু দেশেই নয়, বহির্বিশ্বেও বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে প্রশংসা ও সুনাম অর্জন করেছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষা, গণতন্ত্রে উত্তরণ, সামাজিক উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনাসহ পুনর্গঠন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছেন। তাদের সাফল্যে সারাবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে। ’

এসময় প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনী কমান্ড ও স্টাফ কলেজের অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণসহ সশস্ত্র বাহিনীকে আরও এগিয়ে নিতে তার সরকারের নানামুখী কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানা ক্ষেত্রে আমরা শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, অনেক উন্নত দেশকে ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছি।

শেখ হাসিনা তার বক্তৃতায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন। বলেন, আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে পদ্মাসেতুর মত বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি।

প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশকে আমরা মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করবো।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসসিএসসির কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল একেএম আবদুল্লাহিল বাকী।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
এমইউএম/এইচএ/

** উন্নয়নকাজের সঙ্গে দেশ গঠনেও ভূমিকা রাখছে সশস্ত্র বাহিনী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।