১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে এই প্রতিষ্ঠানের নামে বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় দাঁড়াইল মৌজায় স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রায় ৯ বিঘা জমি কেনা হয়। তৎকালীন বিএনপির সংসদ সদস্য, বর্তমানে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু এই জমি কেনেন।
কিন্তু এরই মধ্যে প্রায় ২৫ বছর পার হতে চললেও সেখানে একটি সাইনবোর্ড সাঁটানো ছাড়া আর কোনো স্থাপনা করা হয়নি। সময়ের ব্যবধানে সাইনবোর্ড মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। পরে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘনিয়ে আসায় মাসখানেক আগে সেখানে আরেকটি নতুন সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
ট্রাস্টের নামে ওই সময় চার লাখ টাকা তুলে এই ৯ বিঘা জমি ১২-১৩ জন মালিকের কাছ থেকে কেনা হয়। তবে জমিতে অবকাঠামো নির্মাণ ও কার্যক্রম চালু না হওয়া পর্যন্ত জমির মালিকরা তা ভোগ করতে পারবেন- এমন চুক্তি ছিল।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম চালু হলে জমির মালিকদের যোগ্য সন্তানরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি পাবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু দিন গড়িয়ে গেলেও এসবের কিছুই পাননি জমির মালিকরা। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল গফুর নামে জমির একজন বিক্রেতা ওই জমি বছরে এক লাখ টাকায় পত্তন নিয়ে চাষাবাদ করছেন।
আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, তার মামা আব্দুল গফুর, বেল্লাল হোসেন, মোফা, আয়েজ উদ্দিন, রকিবুল্লাহর কাছে থেকে সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু প্রায় ৮৭ শতাংশ জমি প্রতি শতক ১ হাজার ২শ হিসেবে কেনেন।
তরফ সরতজা গ্রামের আব্দুল মালেক, আব্দুস সালেক, ধামাচাপা গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি আব্দুল আজিজসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, বাকি জমি হিরণ, লক্ষ্মী সরকার, রবি, করিম মণ্ডল, মজিবরসহ অন্যদের কাছ থেকে একই দামে কেনা হয়।
বর্তমানে সিংহভাগ জমিতে সরিষার আবাদ রয়েছে। কিছু জমিতে রয়েছে বেগুন ও বীজতলা। বেশ কিছু জমি পতিত। জমি কেনার পর মাত্র ৩-৪ বছরের মাথায় বিক্রেতা আব্দুল গফুরকে পত্তন দেওয়া হয়। অথচ জমির ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো নির্মাণ ও কার্যক্রম চালু না হওয়ায় বিক্রেতাদের চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহের কথা দিয়েছিলেন।
তবে পত্তনধারী আব্দুল গফুর বাংলানিউজকে জানান, তিনি জমি পত্তন নিলেও কোনো টাকা দেন না। ফসলের একটা নির্দিষ্ট অংশ গাবতলী জিয়া হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে দিয়ে আসছেন। ফসলের সেই অংশ সংশ্লিষ্টরা কি করেন তা তারাই ভালো বলতে পারবেন। এছাড়া কেসের কারণে আপতত জমি পতিত রাখতে বলা হয়েছে।
কিন্তু কে জমি পতিত রাখতে বলেছেন তিনি তার নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানান।
ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বাংলানিউজকে বলেন, ‘কেস ফেসের কারণে সাইনবোর্ড নতুন করা হয়েছে। এর আগের সাইনবোর্ড মরিচা পড়ে জীর্ণ-শীর্ণ হয়ে পড়েছিলো।
বাংলাদেশ সময়: ০১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমবিএইচ/এএ