অল্পকিছু সিএনজি চালিত অটোরিকশার বাইরে রিকশাই হয়ে উঠেছে রাজধানীতে চলাচলের প্রধান বাহন। তবে মাঝে মধ্যে কয়েকটি যাত্রীবাহী লোকাল বাস চোখে পড়লেও তাতে যাত্রী সংখ্যা ছিল অপ্রতুল।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রায় ঘোষণার পর রাজধানীর বকশীবাজার, শাহবাগ, নীলক্ষেত ও ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল সীমিত ছিল। দুপুরের দিকে পরিবহন চলাচল ও মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বাড়লেও পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ও রায় ঘোষণার পর থেকে সড়কগুলো আবারও ফাঁকা হতে শুরু করে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলেন, দুপুরের দিকে কাকরাইলে পুলিশ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
রায় উপলক্ষে নগরীর বিশেষ বিশেষ মোড়ে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি, এসব চৌকিতে সন্দেহভাজন কাউকে দেখলেই তল্লাশি চালিয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নগরবাসী রাজপথে বের হয়েছেন কম।
আজিমপুরের বাসিন্দা আল-আমিন বাংলানিউজকে বলেন, রায় দিয়েছেন আদালত, এটা আদালতের বিষয়। এটা নিয়ে রাজপথে কেন ঝামেলা হবে। রাস্তায় বের হলে জনগণের কেন ভোগান্তি হবে? এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্যই মানুষ আতঙ্কিত।
অন্যদিকে জ্বালাও-পোড়াও এবং ভাঙচুরের ভয়ে রাজধানীতে গণপরিবহন কম নামিয়েছেন মালিকরা। ফলে সাধারণ যাত্রীদের পড়তে হয়েছে ভোগান্তিতে।
এলিফেন্ট রোডে বাসের জন্য অপেক্ষমান যাত্রী জয় বাংলানিউজকে বলেন, অনেকক্ষণ ধরে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু রাস্তায় গাড়ি নেই। এখন বাসায় যাব কী করে বুঝতে পারছি না।
সেফটি পরিবহনের বাসের চালক রাব্বী বাংলানিউজকে বলেন, গাড়িতে যদি আগুন দেয় বা ভাঙচুর করে সেই অনেক ড্রাইভার ও মালিক গাড়ি নামাইতেছে না।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ড মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। মামলার প্রধান আসামি খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ অন্য চার আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিশেষ জজ ৫-এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
রায়কে ঘিরে সারাদিন পুলিশি নিরাপত্তায় ঢাকা পড়েছিলো রাজধানীর প্রতিটি সড়ক। খালেদার কারাগারে যাওয়ার পথে দু’একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া তেমন তেমন কোনো নাশকতার সৃষ্টি হয়নি। রায়ের পর পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের বিশেষ সেলে নিয়ে যাওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।
খালেদার জিয়ার সাজা নিয়ে নগরীর বাসিন্দা মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। চা স্টল, বাজার কিংবা যানবাহনে সব জায়গায়ই চলছে রায় নিয়ে আলোচনা। এখন অবধি রাজধানী উল্লেখ করার মতো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও নগরবাসী জ্বালাও-পোড়াও ও নাশকতার আশঙ্কামুক্ত নন এখনো।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৮
এমএসি/এমজেএফ