এই ভোগান্তি পিছু ছাড়ে না সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারেও। এই দুইদিন গাড়ি কম থাকায় সড়ক অনেকটা ফাঁকা থাকে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাবালে নূর পরিবহনে যাত্রী ভোগান্তির এমন চিত্র দেখা গেছে। এই পরিবহনটি আগারগাঁও থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচল করে। আবার গাবতলী-মিরপুর ১ -মিরপুর ১০- কালশী- কুড়িল ফ্লাইওভার হয়ে নতুন বাজার রুটেও চলাচল করে।
শুক্রবার সকালে জাবালে নূর পরিবহনে আগারগাঁও থেকে মোট পাঁচজন যাত্রী উঠেন। যাত্রী কম থাকার কারণে তালতলায় প্রায় ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকে পরিবহনটি। এমন অবস্থায় ক্ষোভে দুই যাত্রী তালতলায় নেমে পড়েন। এরপর বাসটি রওনা দেয় মিরপুর-১০ নম্বর সড়ক বরাবর। শেওড়াপাড়ায়ও দাঁড়িয়ে পড়ে বাসটি। সেখানেও দীর্ঘ অপেক্ষার পর চারজন যাত্রী উঠিয়ে পরিবহনটি আবারও চলতে থাকে।
এসময় পরিবহনটির পেছনে থাকা তেতুলিয়া পরিবহনটি ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এই পরিবহনটি জাপান গার্ডেন সিটি (মোহাম্মদপুর) থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচল করে। একই রুট হওয়ায় জাবালে নূর পরিবহন তেতুলিয়া পরিবহনকে সামনে যেতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ হয়ে তেতুলিয়া পরিবহনের চালক পেছন থেকে জাবালে নূর পরিবহনকে জোরে ধাক্কা দেয়। এসময় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন যাত্রীরা। এভাবেই ফাঁকা সড়কে যাত্রী পাওয়ার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেন চালকেরা। এই সড়কে মেট্রোরেলের কাজ চলায় সড়কের প্রশস্ততাও কমেছে। এভাবে প্রতিযোগিতার কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
এক পর্যায়ে তেতুলিয়া পরিবহন একটু সুযোগ পেয়ে জাবালে নূরকে ওভারটেক করতে যায়। এমন সময় জাবালে নূর বাম দিকে বেঁকে যায়। ফলে দুটি পরিবহনের সঙ্গে হালকা সংঘর্ষ হয়। তেতুলিয়া পরিবহন ও জাবালে নূরের লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দুই পরিবহনের যাত্রীদের মধ্যে। মিরপুর সড়কের সেনপাড়ায় দুই বাসের চালকের মধ্যে শুরু হয় কিল-ঘুষির প্রতিযোগিতা।
দুই পরিবহন থেকে নেমে পড়েন যাত্রীরা। পায়ে হেঁটে ১০ নম্বরের দিকে এগুতো থাকেন তারা। এসময় তেতুলিয়া পরিবহনের যাত্রী আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, অফিস ডে মানেই ঢাকায় যানজটে কষ্ট। শুক্র-শনিবারে বাস চালকদের ওভারটেকের কারণে ভোগান্তি। আমরা যাবোটা কোথায়? অন্যদিন যানজটের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় পড়ে থাকি। আর ফাঁকা সড়কে বাসের চালকেরা সারা পথ যাত্রী উঠাতে থাকেন। আমি শ্যামলী থেকে তেতুলিয়া পরিবহনে উঠেছি, যাবো উত্তরা। অথচ এখন পায়ে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বরে যেতে হচ্ছে।
শুধু আরিফুর রহমান নয় সেনপাড়া বেগম রোকেয়া সরণীর সিএনজি ফিলিং স্টেশনে দুই বাসের যাত্রী নেমে পড়েন। এখানে নতুন করে আবারও দুই বাসের চালক ও হেলপারের মধ্যে শুরু হয় মারামারি।
ঝামেলার জন্য এক পর্যায়ে জাবালে নূর পরিবহনের চালক রাজু নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমার গাড়িডা সামনে ওর গাড়িডা (তেতুলিয়া পরিবহন) পেছনে। ও আইসা (তেতুলিয়া পরিবহনের চালক) আমার গাড়ির পেছনে বাড়ি মারছে। আমি কইছি তুই আমার গাড়ির পেছনে বাড়ি মারলি ক্যা। এই কথা বলাই ও আমারে মারছে। ’
তবে রাজুর অভিযোগ অস্বীকার করে তেতুলিয়া পরিবহনের চালক আলামিন বলেন, ‘ওই ইচ্ছা কইরা আমার গাড়ির সামনের লুকিং গিলাস (গ্লাস) ভাংছে। ’
এভাবেই দুই পরিবহনের চালকের কথা কাটাকাটি চলতে থাকে। অন্যদিকে ফাঁকা সড়কেও পায়ে হেঁটে বিকল্প পরিবহনের খোঁজে হাঁটতে থাকেন যাত্রীরা…..।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৮
এমআইএস/আরআর