ওবায়দুল কাদের বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি (খালেদা জিয়া) সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জেলখানা আরাম আয়েশের জায়গা না, জেল তো জেলই।
তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের পর দুই নেত্রীকে যখন মাইনাস করার পরিকল্পনা ছিল, তখনও কাউকে পরিচারিকা অ্যালাউ করা হয়নি। সেটাও তো জেল, সাব-জেল জেল একই তো। এটা জেল কোডের নিয়ম। ব্যক্তিগত কোনো পরিচারিকা, ব্যক্তিগত কোনো সাহায্যকারী নিয়ে যাবেন, জেলের ভেতরে প্রবেশ এটা সম্ভব না।
‘আমি যতদূর জানি, খালেদা জিয়াকে আগের জেল সুপারের রুম রিনোভেট করে রাখা হয়েছে। আক্ষরিক অর্থে যেটা ডিভিশন বলে, ডিভিশন দেওয়ার যে বিষয়, সে বিষয়টা এখনও অনুপস্থিত আছে। হয়তো হয়েও যাবে। ’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখন যে মর্যাদা এবং যে খাবার-দাবারের আয়োজন, তার খোঁজ খবর নেওয়া- এসব বিষয়ে আমার মনে হয় ডিভিশনের প্রিজনাররা যে সুবিধাটা ভোগ করেন, আমরাও তো ছিলাম; তার চেয়েও খালেদা জিয়ার মর্যাদা, আমি যতটুকু শুনেছি, জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আমার আলোচনা হয়েছে। তিনি মর্যাদা, গুরুত্ব দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাচ্ছেন এবং তাকে কোনো অমর্যাদা করা হচ্ছে না বা তিনি যা জিজ্ঞেস করছেন বা চাচ্ছেন, তাকে দেওয়া হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, জেলখানায় আপনি যত আরাম-আয়েশে থাকার চিন্তা-ই করেন, জেল আরাম আয়েশের জায়গা নয়। এরপরও এক জায়গায় থাকতে হলে মানুষের মোটামুটি কিছু প্রয়োজন আছে। খালেদা জিয়ার মর্যাদাও উনি কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী, একটা বড় দলের চেয়ারপারসন। কাজেই তার কোনো প্রকার, অসম্মান, অমর্যাদা বা তার সুযোগ-সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করা- সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি।
‘দেখুন এসি তো জেলে দেওয়া হয়নি, যখন তারা সাব-জেলে ছিলেন, আমাদের নেত্রী এবং খালেদা জিয়া। এমনই ফ্যান থাকে। আমরা ডিভিশনে ছিলাম। এসি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এ ট্র্যাডিশন তখনও ছিল না। এটা কেন যে দাবি করছেন, ঠিক জানি না। আমার মনে হয় উনার কোনো অসম্মান হবে না। মর্যাদা উনার যতটুকু পাওয়া উচিত, খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে অন্যান্য ফেসেলিটিজ, যা উনার প্রয়েজনীয় সবই উনি পাবেন। তারপরও যে কথা বললাম, জেল তো জেল। ’
গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকে না রাখতে দেওয়া প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা তো জেলের ব্যাপার। জেল কোড আছে, জেলের নিয়ম অনুযায়ী। এ পর্যন্ত ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী- এদেশের রাজনীতিকরা জেলে ছিলেন। কখনও ব্যক্তিগত কোনো সাহায্যকারী, ভেতরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জেল কোড অ্যালাউ করে না।
পরিত্যক্ত ভবনে রাখা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জেলটা পরিত্যক্ত হলো ছয় মাস আগে। ওয়েল ফার্নিশড রুম, এটাকে আরও নতুন করে ভালোভাবে ফার্নিশড করা হয়েছে যাতে তার কোনো অসুবিধা না হয়। এর সুযোগ-সুবিধা সবই আছে বরং ডিভিশনাল প্রিজনার হিসেবে।
তিনি বলেন, ডিভিশনের ব্যাপারটা আদালতের রায়ের সঙ্গে থাকবে, এটা কেন দিলো না আমি ঠিক জানি না। নিশ্চয়ই আদালত এটা দেওয়ার জন্য বলবেন। আমার মনে হয় ডিভিশনের চেয়ে তিনি খারাপ অবস্থায় নেই।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যে তিন আসামি দেশের বাইরে আছে তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সময় মতো উদ্যোগ নেওয়া হবে। অলরেডি ফ্রান্সে ইন্টারপোলের কাছে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এটা তো একটা প্রক্রিয়ার ব্যাপার।
‘হঠাৎ করে চাইলেই তো হবে না, বঙ্গবন্ধুর দু’তিনজন খুনি আছে আমরা কিন্তু এখনও ফিরিয়ে আনতে পারিনি। এটা টাইম অ্যান্ড প্রসেস। এটা আমি সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারছি না,’ যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮/আপডেট: ১৫০৪ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এসএইচ/এমএ