ছাত্রকে শারীরিক নির্যাতনের (বলাৎকার) অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতের (সদর) বিচারক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এ আদেশ দেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাউসার নিয়াজি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রের (১৬) মা ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট বিবাদী নুর আলমকে একমাত্র আসামি করে আদালতে মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ে পড়ার কারণে প্রধান শিক্ষক নুর আলমের সঙ্গে তার ছেলের নানাভাবে সখ্যতা গড়ে ওঠে। এরপর নুর আলম নানা প্রলোভন দেখিয়ে এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে তার ছেলেকে একাধিকবার বলৎকার করে। নুর আলম জেলা শহরের সরকারি আবাসিক এলাকায় থাকাকালীন তার বাসায়ও ছেলেকে নিয়ে বলৎকার করা হয়। সর্বশেষ ঘটনার পর তার ছেলে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানতে পেরে আদালতে মামলা করা হয়।
মামলা দায়েরের পর আসামিকে হাজির হওয়ার জন্য আদালত একাধিকবার তারিখ ধার্য করেন। সর্বশেষ রোববার আসামির হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তিনি হাজির না হওয়ায় আদালত তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার জন্য সুধারাম থানাকে নির্দেশ দেন।
বিদ্যালয়ের অন্যান্য ও স্থানীয়রা জানায়, প্রধান শিক্ষক নুর আলম নৈতিক স্থলনজনিত অভিযোগে অভিযুক্ত। তাছাড়া তিনি একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক হিসেবেও ইতোমধ্যে আখ্যায়িত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে। ৭ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ওই ছাত্রের সঙ্গে নিজের ছেলের মতো সম্পর্ক তৈরি করেন তিনি।
পরবর্তীতে নানাভাবে প্রলোভন, ভুল বুঝিয়ে এবং একপর্যায়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক তাকে শারীরিক নির্যাতন (বলৎকার) করেন। ওই শিক্ষক একাধিকবার এ ঘটনা ঘটালেও বিষয়টি সর্বশেষ জানাজানি হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসের দিকে। তখন ছেলেটি কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইউএনও তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক পুনরায় তদন্ত করে সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন ইউএনওকে।
দ্বিতীয় দফায় তদন্ত করেও ঘটনার সত্যতা মিললে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদকে লিখিতভাবে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন ইউএনও।
একপর্যায়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ প্রধান শিক্ষক নুর আলমকে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে ওই ছাত্রের মা বাদী হয়ে আদালতে প্রধান শিক্ষক নুর আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নুর আলমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা থানায় এসে পৌঁছেনি। গ্রেফতারি পরোয়ানা পাওয়ার পর অভিযান চালানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮
আরএ