দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার ডিভিশন পাওয়া নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের জবাবে শেখ সেলিম বলেন, ওনাকে এত সুন্দর একটা বাড়ি দেওয়া হয়েছে, গোটা জেলখানাই তো ওনাকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কত আরাম-আয়েশে আছেন।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন সিনিয়র এই পার্লামেন্টেরিয়ান।
শেখ সেলিম বলেন, হাওয়া ভবনে বসেই তারেক জিয়া জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সঙ্গে বৈঠক করে আওয়ামী লীগকে পুরোপুরি শেষ করে দিতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। হামলার পর খুনিদের বিদেশে পালানোর সুযোগ দিয়ে প্রমাণ হয়েছে এই গ্রেনেড হামলার সঙ্গে খালেদা জিয়াও জড়িত ছিলেন। এজন্য সরকারকে অনুরোধ করবো যদি সুযোগ থাকে খালেদা জিয়াকে এক নম্বর আসামি করে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার তরান্বিত করুন।
খালেদা জিয়ার রায়ের পর লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, তারেকের নির্দেশে কিছু সন্ত্রাসী লন্ডনে বাংলাদেশ হাই কমিশনে হামলা করে ভাঙচুর করে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ছবি পর্যন্ত সেখানে ভাঙচুর হয়। বঙ্গবন্ধু মানে বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু মানে স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু না হলে এই স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পারতাম না। সেই বঙ্গবন্ধুকে কারা আক্রমণ করতে পারে? আক্রমণ করতে পারে পাকিস্তানি এজেন্ট স্বাধীনতা বিরোধী ’৭১ ও ’৭৫ এর পরাজিত শক্তিদের এজেন্টরাই।
‘তারেক রহমান আগের এক মামলায় ৭ বছর, এবার হয়েছে ১০ বছরের কারাদণ্ড। আর সেই তারেকের নির্দেশে লন্ডনে এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। ’
ব্রিটিশ সরকারের প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, সেদিন বাংলাদেশ হাই কমিশনের ভেতরে ঢুকে যে হামলা করলো, আপনারা কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? সেদিন সন্ত্রাসীরা, জঙ্গিরা কীভাবে হাই কমিশনে ঢুকলো? আজ যদি আপনাদের হাই কমিশনে ঢুকতো সঙ্গে সঙ্গে আমরা ব্যবস্থা নিতাম। আপনার কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? এটা আপনাদের ব্যর্থতা। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। তারেক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তাই তাকে এভাবে বিচরণ করতে দিয়ে আপনারা আপনাদের দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছেন। আপনাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন। তাকে আমাদের সরকারের কাছে হস্তান্তর করুন। এই অপকর্ম থেকে আপনারও রেহাই পান।
তিনি বলেন, সৌদি আরব সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। সেখানেও পাঁচজনের বিরুদ্ধে বিপুল অংকের টাকা পাচারের যে তদন্ত শুরু করেছে তাতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম উঠে এসেছে। সেখানে ১২শ কোটি ডলার ধরা পড়েছে। সৌদি সরকার তাদের বিপুল পরিমাণ পাচার করা টাকাও বাজেয়াপ্ত করেছে। বেলজিয়াম, কাতার, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে জিয়া পরিবারের বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বেই খালেদা জিয়ার পরিবার দুর্নীতিবাজ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, খুনি-দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কীসের সংলাপ? বরং উচিত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা করে বিচার করা। বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে হবে। দেশে সংবিধানবিরোধী কোনো স্বপ্নের সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না।
সংসদেও বসন্তের হাওয়া
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৮
এসএম/এএ