২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিতে এ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
আশকোনার সদর দফতরই হবে স্ট্রাকিং এ ফোর্সের নিজস্ব ঠিকানা। বর্তমানে র্যাবের সদর দফতর ও ১৪টি ইউনিটের কোনোটির নিজস্ব অবকাঠামো নেই। ২০০৪ সালে পুলিশের অধীনে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কেবল ভাড়া বাড়িতেই চলছে র্যাবের কার্যক্রম।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী চান না সরকারি কোনো কার্যালয় এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাড়া বাড়িতে থাকুক। এতে কার্যক্ষমতা কমে যায় বলে মনে করেন তিনি। এমন একটি বিশেষ বাহিনীর সদর দফতর ভাড়া ভবনে থাকাও দেশের জন্য সম্মানজনক নয় বলে মত প্রধানমন্ত্রীর।
মুস্তফা কামাল আরো বলেন, গত ১৫ বছর যাবত র্যাবের ফোর্স ও কর্মচারীদের আবাসন, যোগাযোগ এবং যন্ত্রপাতি পরিবহনের যানবাহন, অস্ত্র-গোলাবারুদ, ডগ স্কোয়াডসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও রাখা হচ্ছে ভাড়া বাড়িতেই। এ দুর্দশা থেকে বের হয়ে আসতে নিজস্ব জমিতে আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সদর দফতর, র্যাব প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় এবং ১৪টি র্যাব কমপ্লেক্স নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে র্যাব ও গণপূর্ত অধিদফতর।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকার দক্ষিণ খান থানার আশকোনা হাজি ক্যাম্পের কাছে হচ্ছে ১৪ তলার ভিত্তিসহ ১৩ তলা বিশিষ্ট র্যাব সদর দফতরের অফিস ভবন, ১২তলার ভিত্তিসহ ১২তলা বিশিষ্ট ব্যাচেলর অফিসার্স কোয়ার্টার (১৪৪ ইউনিট), ১০তলা ভবনের ফোর্স ব্যারাক, ৮ তলা বিশিষ্ট এমটি শেড কাম উপপরিচালক মেস, ১০ তলার আবাসিক কোয়ার্টার নির্মাণ (১০০০ বর্গ ফুটের ৪০ ইউনিট), ৮০০ বর্গফুটের ৬০ ইউনিটের ১০ তলা আবাসিক কোয়ার্টার ভবন, ৬০০ বর্গফুট মাপের ৬০ ইউনিটের ১০ তলা আবাসিক কোয়ার্টার ভবন, একতলা বিশিষ্ট রান্নাঘর, তিনতলা বিশিষ্ট মহাপরিচালকের কার্যালয়, জিমনেসিয়াম ভবন, ১০তলা বিশিষ্ট মেস, ডাইনিং, কুক হাউজ ভবন, দ্বিতল গার্ডরুম ভবন, সেন্ট্রি বক্স ভবন, একতলার স্টোর ভবন, তিনতলার ম্যাগাজিন ভবন, একতলার এমআই ভবন, তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদ ভবন, একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন, একটি করে পাম্প হাউজ, ওয়ার্কশপ নির্মাণ, আসবাবপত্র, কম্পউটারসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, ২টি জিপ, একটি পিকআপ ক্রয় ও সুইমিংপুলসহ আনুষঙ্গিক নির্মাণ ও ক্রয় বাবদ এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৯৫ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এ প্রকল্পের বাইরে ‘র্যাব-৭ কমপ্লেক্স নির্মাণ’ ও ‘র্যাব-৫ কমপ্লেক্স নির্মাণ’ নামে আরো দুটি প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে যাচাই-বাছাই ও বিবেচনাধীন প্রক্রিয়ায় রয়েছে। প্রকল্প দুটির মাধ্যমে ১২টি র্যাব ব্যাটালিয়ন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে। অন্য দুটি র্যাব ব্যাটালিয়ন কমপ্লেক্স (রংপুর ও ময়মনসিংহ) নির্মাণ প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বর্তমানে র্যাবের একটি প্রধান কার্যালয়, র্যাব ফোর্সেস প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় এবং ১৪টি কার্য ইউনিট রয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-১, র্যাব-২, র্যাব-৩, র্যাব-৪ ও র্যাব-১০, এ পাঁচটি ইউনিট রয়েছে। অন্য নয়টি ইউনিট ঢাকার বাইরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-৫, খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-৬, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-৭, বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-৮, সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-৯, নারায়ণগঞ্জ মেট্রোপলিটন এলাকায় র্যাব-১১, সিরাজগঞ্জে র্যাব- ১২, রংপুরে র্যাব-১৩ এবং ময়মনসিংহে র্যাব-১৪ অবস্থিত।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
আরএম/এমজেএফ