কয়েলদার দাম হাঁকা শুরু করেন। ৭শ, ৭শ, ৮শ, ৮শ, ৯শ, ৯শ…।
পোড়াদহ মেলায় ১০০ কেজি ওজনের বাঘাইড়
দাঁড়িপাল্লা ফাঁকা করার পর আবারও একইভাবে ব্যাপারীর চাহিদা বুঝে অন্য মাছ ভরা হয় সেই পাল্লায়। এভাবেই চলছে পাইকারি আড়তে বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় মাছের বিকিকিনি।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বগুড়ার গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলায় পাইকারি আড়তগুলো এমনই জমজমাট।
ঐতিহ্যবাহী এ মেলা ঘিরে ১২টির মতো বড় বড় আড়ত বসেছে পাইকারি দরে মাছ বিক্রির। ভোর ৪টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত মাত্র ৬ ঘণ্টায় এসব আড়তে বিকিকিনি হয়েছে প্রায় ৩ কেটি টাকার মাছ। বিক্রি চলবে সন্ধ্যা নাগাদ। সবমিলে এসব পাইকারি আড়তেই কমপক্ষে এবার ১২ কোটি টাকার মতো মাছ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছয়তারা মৎস্য আড়তদারের মালিক শাহাদৎ হোসেন বাবু বাংলানিউজকে জানান, এসব পাইকারি আড়ত থেকে মেলায় আসা খুচরা ব্যবসায়ীরা মাছ কেনেন। অনেক সময় সাধারণ ক্রেতাও কিছু করে মাছ কেনেন। ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত তার আড়তেই প্রায় ৩০-৩৫ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে বাঘাইড়, রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভার কার্প, বিগহেড, আইড়, বোয়াল, চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
ঐতিহ্যবাহী এ মেলা উপলক্ষে প্রায় এক হাজারের মতো খুচরা ব্যবসায়ী দোকান বসিয়েছেন। এসব ব্যবসায়ীরা তাদের কাছ থেকে মাছ কিনে মেলায় আগত ক্রেতা সাধারণের জন্য মাছের পসরা সাজিয়েছেন।
মায়ের দোয়া মৎস্য আড়তদারের মালিক মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পাইকারি দর হিসেবে ১৫-২০ কেজি ওজনের প্রতিকেজি কাতল ৯শ, রুই ৮শ, মৃগেল ৭শ, সিলভার কার্প ৫শ, বিগহেড ৬শ ব্লাক কার্প ৩শ, বাঘাইড় ১ হাজার ৫শ, বোয়াল ১ হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তবে ৫-১০ কেজি ওজনের মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে কিছুটা কম দামে। সেই মাছগুলো খুচরা বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম হাঁকিয়ে বেচাবিক্রি করছেন। যোগ করেন তিনি।
এসব আড়তদাররা বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেক বছর দূর-দূরান্তের বিভিন্ন বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহর থেকে চাষি ও ব্যবসায়ীরা এ মেলায় বড় বড় বিভিন্ন প্রজাতির বিপুল পরিমাণ মাছের আমদানি ঘটান। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, নাটোর, সিংড়া, সিরাজগঞ্জ, উল্লাপাড়া, নওগাঁ, মহাদেবপুর, কাহালু, দুপচাঁচিয়া, আদমদীঘি, গাইবান্ধা, রনবাঘা, আত্রাই, মোলামগাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ মেলায় মাছ এসেছে।
মাছগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় ছোট ও মাঝারি গাড়িতে ছোট আকারের জলাশয় বানিয়ে জ্যান্ত আনা হয়েছে। কারণ ক্রেতা ও ব্যাপারীদের কাছে জ্যান্ত মাছের চাহিদাই আলাদা। আর এতে দামও বেশি পাওয়া যায়। মেলা উপলক্ষে মাছগুলো প্রায় ৩-৪ মাস আগ থেকেই সংগ্রহ করা হয়। ছোট ও মাঝারি জলাশয়ে তা লালন পালন চলতে থাকে। এরপর মেলার আগের দিনে মাছগুলো উঠিয়ে তা বিশেষ ব্যবস্থায় জ্যান্ত মেলায় আনা হয় বলে এসব আড়তদাররা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমবিএইচ/এএ