বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ফখরুল ইমাম বলেন, শিক্ষার পদে পদে ঘুষ বাণিজ্য।
স্থিরচিত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, শ্যামলী বাসে যেসব যাত্রী ছিল সবার কাছেই প্রশ্ন ছিল। এ পর্যন্ত ৭টি বিষয়ের সব প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। গতকাল (মঙ্গলবার) বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ বিজ্ঞানের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের জন্য গতকাল ৩৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। প্রশ্নফাঁস পুরো বিষয়টি সরকারের নাগালের বাইরে।
ব্যাংকিং খাতের অনিয়ম তুলে ধরে ফখরুল ইমাম বলেন, ব্যাংকিং খাত সবচাইতে বড় খাত। আর এই ব্যাংকিং খাতে চলছে নৈতিকতার সংকট। ব্যাংকিং খাতে না জেনে শুনেই ব্যাংক ঋণ দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণে ব্যাংক ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। ব্যাংক ঋণ যারা পাচ্ছেন তারা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খেলাপি হয়ে যাচ্ছেন। ব্যাংক খাতে হরিলুট-অর্থপাচারের ভয়াবহ তথ্য আছে। ব্যাংক এখন পরিবারতন্ত্রে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, এলসির মাধ্যমে কোনো পণ্য না এনেই পুরো টাকাই বিদেশে রাখা হচ্ছে। ভুয়া শিপমেন্টের মাধ্যমে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। এতে সব পক্ষই জড়িত।
ফারর্মাস ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের নাম উল্লেখ না করে এই সংসদ সদস্য তার আলোচনায় বলেন, বিশেষ এক ব্যাংকের মালিক বিশেষ অঞ্চলের ৩ হাজার লোক নিয়োগ দিয়েছে। যে নিয়োগের ৯০ শতাংশই তার নিজ এলাকার। নিয়োগের ক্ষেত্রেই যদি স্বজনপ্রীতি থাকে, তাহলে সেই ব্যাংক কী করে ঋণ কেলেঙ্কারি ঠেকাবে?
বিদ্যুৎ খাতে সরকার উন্নয়নের কথা বললেও বিরোধী দলের এই সদস্য মানতে নারাজ। তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী অনেক আশার কথা শুনিয়েছেন কিন্তু এখনো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ আমরা পাই না। এখনো লোডশেডিং হয়, যদিও প্রতিমন্ত্রী স্বীকার করেন না। বিদ্যুতের কেন্দ্রগুলো কলঙ্কের প্রতীক হয়ে থাকবে। রামপাল থেকে শুরু করে বিদ্যুতের যে বড় বড় প্রজেক্ট হচ্ছে সেগুলো ৫-১০ বছর পরে আর চলবে না।
নতুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের উক্তি তুলে ধরে ফখরুল বলেন, নতুন দায়িত্ব পেয়ে মন্ত্রী বলেছেন, ডুবে যাওয়া নৌকা ভাসানোর চেষ্টা করছেন তিনি। তাকে বলতে চাই, ডোবা নৌকা কয়বার ভাসাবেন?
খালেদা জিয়ার কারাবাস সম্পর্কে ফখরুল ইমাম বলেন, নদীতে জোয়ার-ভাটা হয়। তবে জোয়ার-ভাটা এক সঙ্গে হয় না। রাজনীতির জোয়ার-ভাটার খেলায় কেউ এগিয়ে যাবে কেউ পিছিয়ে পড়বে এটাই নিয়ম।
এ সময় তিনি তার দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ এর বিরুদ্ধে করা মমলার কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের পার্টির চেয়ারম্যান যখন জেলে ছিলেন তার বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা হয়েছিল। প্রতিটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে খালাস পেয়েছি। সেই সময় বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদকে জেলখানায় নেওয়া হয়েছিল। তখন তাকে ১৫ দিন কয়েদিদের সঙ্গে মাটিতে রাখা হয়েছিল। এগুলো মনে পড়ে যায়। ইতিহাস বারবার ফিরে আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৮
এসএম/এমজেএফ