ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মানবাধিকার ছাড়া উন্নয়ন পূর্ণতা পায় না

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
মানবাধিকার ছাড়া উন্নয়ন পূর্ণতা পায় না ওয়ার্ল্ড ভিশনের সংবাদ সম্মেলনে অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মানবাধিকার ছাড়া উন্নয়ন পরিপূর্ণতা পায় না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। সেজন্য মানবাধিকার নিশ্চিতে সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ওয়ার্ল্ড ভিশন আয়োজিত ‘শিশুর প্রতি শারীরিক সহিংসতা বন্ধ হোক’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন কাজী রিয়াজুল হক। শিশুর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকারি বাজেটের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণার তথ্য উপস্থাপনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

নির্বাচনী প্রচারণায় শিশুদের ব্যবহার করা যাবে না জানিয়ে মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনী কাজে শিশুদের ব্যবহার করতে কেউ পারবেন না। সামান্য টাকার জন্য শিশুদের জীবন দিতে হচ্ছে, নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে বিষয়টি নিয়ে বলেছিলাম, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যারা শিশুদের নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করবে, তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।

মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদেরও ব্যর্থতা আছে। মানবাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সরকারেরও দায়বদ্ধতা আছে। সরকারের সঙ্গে অনেক দেন-দরবার করেই মানবাধিকার নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এক্ষেত্রে সমস্ত এনজিও ও বুদ্ধিজীবীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

কমিশনের চেয়ারম্যান মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে একটি হটলাইন (১৬১০৮) চালু হচ্ছে উল্লেখ করে জানান, মার্চ মাসে চালু হবে হটলাইন। তবে জনবল কম থাকায় অফিস আওয়ারে এই নম্বর চালু থাকবে। এখানে অভিযোগগুলো রেকর্ড করে রাখা হবে। অভিযোগ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওয়ার্ল্ড ভিশনের ডেপুটি ডাইরেক্টর সাবিরা নূপুরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশনের ডাইরেক্টর চন্দন জেড গোমেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসির (সিবিপি) পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ প্রমুখ।

মূল বক্তব্য উপস্থাপনকালে শিশুদের জন্য বরাদ্দ বাজেটের অংক জাতীয় বাজেটে সহজে ট্র্যাক করার জন্য আলাদা কোডের সুপারিশ করেন ড. এম. আবু ইউসুফ। ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহযোগিতায় জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ে বাজেট বরাদ্দের ওপর এক গবেষণার প্রেক্ষিতে এই সুপারিশ করেন তিনি।  গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল শিশুদের প্রতি সহিসংতা।    

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত ওয়ার্ল্ড ভিশনের সামগ্রিক তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতি ১০ জনে ৬ শিশু শারীরিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে। কিছু বিদ্যালয়েও খারাপ ফলাফলের জন্য বা শাসনের নামে শারীরিক শাস্তি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৮২ শতাংশ শিশু বিভিন্নভাবে সহিংসতার শিকার হয় ১৪ বছর বয়সে পা দেওয়ার আগেই। ৭৭.১ শতাংশ শিশু বিদ্যালয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। এছাড়া, ৫৭ শতাংশ শিশু কর্মক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনে ভোগে।  

শিশু নির্যাতনের কারণ হিসেবে ধর্মীয়, প্রথাগত ও সাংস্কৃতিক রীতি, শিশু অধিকার বিষয়ে অসচেতনতা ও শৃঙ্খলাবোধের অভাব এবং শিশু সুরক্ষা আইনের দুর্বল প্রয়োগকে দোষারোপ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
এমএএম/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।