অন্যদিকে সম্পত্তি কেনা নগরের প্রভাবশালী আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে এক ব্যক্তির লোকজন তাদের বসতভিটা ছাড়তে পাঁচ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। তাদের হুমকি-ধমকিতে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, অনিদ্রা আর অস্থিরতার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় গুহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সুখময় গুহ ও আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন ওই পরিবারের সদস্যরা। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারটির অভিভাবক স্নেহাশীষ চৌধুরী, মিরা রাণী গুহ দাস ও বিপ্লব কুমার গুহ মানিক উপস্থিত ছিলেন।
পরিবারটির সদস্য ও স্থানীয় সংবাদকর্মী বিপ্লব কুমার গুহ মানিক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নগরীর মহারাজা রোডের ৯ ও ১১ নম্বর হোল্ডিংয়ে তাদের মোট জমির পরিমাণ ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ জমির মালিক ছিলেন তার দাদা রায় বাহাদুর জগদীশ চন্দ্র গুহ (জেসিগুহ)। তার মৃত্যুর পর ছেলে শিশির কুমার গুহ উত্তরাধিকার সূত্রে এ জমির মালিক হন।
শিশির কুমার গুহের দুই স্ত্রী ছিলেন। উইল প্রোভাইডে প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের সম্পত্তি দেওয়া হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রী ক্ষণা রাণী গুহ, তার তিন ছেলে সুখময় কুমার গুহ, সুবিনয় কুমার গুহ, বিপ্লব কুমার গুহ ও বোন মিরা রাণী গুহ দাসের মাঝে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ভাগাভাগিতে মোট সম্পত্তির ৪ আনা করে তিন ছেলেকে দেওয়া হয়। বোন ও স্ত্রীকে দেওয়া হয় ২ আনা করে। ১৯৬২ সালে শিশির কুমার গুহ এ সম্পত্তি দলিল করে দেন। এর তিন বছর পর তিনি মারা যান।
পরে বৈধভাবে তার সন্তানরাই এ সম্পত্তির মালিক হন। ১৯৭৫ সালে তার বড় ছেলে সুখময় গুহ ভারত চলে যান। ১৯৯৮ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর ছোট ভাই বিপ্লব কুমার গুহ’র নামে তিনি নিজের সম্পত্তির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লব কুমার গুহ মানিক বলেন, ১৯৯৮ সালে হঠাৎ করেই দেশে ফিরে সুখময় কুমার গুহ নিজের অংশের মালিকানাসহ পুরো সম্পত্তিই আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে ওই ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন এবং তাকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়ে দেন, যা পুরোপুরি অবৈধ।
‘বাবার উইল অবমাননা করে এককভাবে তিনি আরেকজনের নামে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিয়েছেন। অথচ আইনগতভাবে তিনি এটি দিতে পারেন না। ’
সংবাদ সম্মেলনে এ পরিবারের অভিভাবক স্নেহাশীষ চৌধুরী বলেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের ওই ব্যক্তি মাস খানেক আগে ১১ নম্বর হোল্ডিংয়ে আমাদের দোতলার বাড়িটি দখলে নিয়ে গুঁড়িয়ে দেন। এখন ৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের দোতলা বাড়িটি ছাড়ার জন্য সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে পাঁচ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মামুন ও তার সন্ত্রাসীরা বারবার আমাদের হুমকি দিচ্ছেন। বাড়ি না ছাড়লে সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলেও শাসাচ্ছেন। কিন্তু আমরা আমাদের বাড়ি ছেড়ে যাবো না। জীবন দিয়ে হলেও বসতভিটা রক্ষা করবো। আমি জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে হুমকি-ধমকিতে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
এমএএএম/এইচএ/