শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহলের সামনে ভ্যানচালক নূর ইসলাম বর্তমানে নগরীতে মশার উপদ্রব বেড়ে যাওয়া নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা এভাবে তুলে ধরেন বাংলানিউজের কাছে।
নূর ইসলামের মতো মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দাদের একই কথা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকাটিতে মশার উপদ্রব ও বংশবিস্তারের জন্য অন্যতম কারণ কাটাসুর ওয়াসারখাল!
টাউনহল থেকে ১৫-২০ মিনিটের রাস্তার দূরত্ব থেকে শুরু হয় মশা প্রজননের উৎকৃষ্ট পরিবেশ হিসেবে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত কাটাসুর ওয়াসার খাল। খালটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, মশার প্রজননস্থল ও অভয়াশ্রম পরিণত হতে একটি জলাশয়ের যে সব যোগ্যতা থাকার দরকার এই খালে তার সবই আছে। নোংরা-দুর্গন্ধযুক্ত পানি, ময়লা আবর্জনা, বিভিন্ন পণ্যের প্লাস্টিক ও পলিথিনের পরিত্যাক্ত মোড়কের স্তূপ হয়ে আছে খালটি।
খালের আশপাশে গেলেই হাজার হাজার মশার গুনগুন শব্দ শোনা যায়। আর এখানে জন্ম নেওয়া মশা থেকেই পুরো মোহাম্মদপুর এলাকায় তার বংশবিস্তার হচ্ছে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।
তবে ওয়াসার এই খালটিকে মশার অভয়াশ্রমে পরিণত করতে স্থানীয়দের ভূমিকাও কম না। বাসাবাড়ি ময়লা থেকে শুরু করে যেকোনো ময়লা আবর্জনার জন্য খালটিকে অঘোষিত ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলেছেন স্থানীয়রা। ফলে খালটিতে পানির প্রবাহ কমে গিয়ে মশার বংশবিস্তারের জন্য উৎকৃষ্ট এক স্থানে পরিণত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন ও ওয়াসার দায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। মশা নিধনের ওষুধ ওই খালে বছরে মাত্র দুইবার দেওয়া হয়। এছাড়া খালটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জন্য কোনো উদ্যোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তারা।
মোহাম্মদপুর পশ্চিম বাঁশবাড়ি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. বাবুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৫ দিন ধরে মশার উপদ্রব অনেক বেড়ে গেছে এলাকায়। দিন-রাত মশার কামড় থেকে বাসায় কয়েল জ্বালিয়ে রেখেও রক্ষা হচ্ছে না। তবে মশার উৎপাত বেড়ে গেলেও বাড়েনি সিটি করপোরেশনে মশকনিধন ওষুধ দেওয়ার পরিমাণ। মাঝে মধ্যে তাদের দেখা পাওয়া যায়, কিন্তু কোনদিক থেকে এসে কোনদিকে চলে যায় তা দেখা যায় না। টাউনহল এলাকার আরেক বাসিন্দা অভিযোগ করে বাংলানিউজ বলেন, চারিপাশে ময়লা আর্বজনার স্তূপ রয়েছে এলাকায়। তাছাড়া কাটাসুর ওয়াসা খালে প্রকাশ্যে ময়লা ফেলছেন স্থানীয়রা।
আবর্জনা পরিষ্কার ও স্থানীয়দের সচেতন করে খালটি পরিষ্কার করা না হলে স্প্রে দিয়ে এ এলাকার মশানিধন সম্ভব না। ইতোমধ্যে মশার কামড়ে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। অনেকে আবার শঙ্কিত হয়ে বলছেন, দ্রুত মশানিধনে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে চিকুনগুনিয়া জ্বরের মতো ভয়াবহ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে।
তবে মশানিধনে বসে নেই জানিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মশা নিধনের ওষুধ দেওয়ার এক বিশেষ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কীট নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোহাম্মাদ অলম শরীফ খান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
এমএসি/এএটি/এমজেএফ