অন্যদিকে মৃত আকলিমার ভাইয়ের অভিযোগ, আকলিমা তার সংসারের প্রয়োজনে দুই মহিলার কাছ থেকে কিছু টাকা সুদে আনেন। সেই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আকলিমাকে তার স্বামী আলম দৈহিক নির্যাতন চালান।
গত ০৬ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার এলাকার হাজী আউয়াল রোডে ৫৯/৪ আমীন ভিলা ভবনের ৫ম তলায় একটি ফ্লাটে আকলিমা আক্তার (৩৫) নামে ওই গৃহিণীর মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎস আকলিমাকে মৃত ঘোষণা করে। পরদিন, ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এ ঘটনায় গত ১৪ জানুয়ারি মৃত আকলিমা আক্তারের ভাই ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে মহানগর হাকিম আদালতে একটি হত্যা মামলা (সিআর মামলা নং-৩৫/১৮) দায়ের করেন। মামলায় আকলিমার স্বামী মো. আলম (৪০), তার বড় ছেলে আবিদ হাসান (২১), ছেলের বৌ আঁখি, মো. নুরু জামান (আলমের বড় ভাই), আব্দুল কুদ্দুস (আলমের মামা) ও শাহবুদ্দিন (আলমের খালাতো ভাই) সহ মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বিভাগকে দেয়।
মৃত আকলিমার ভাই ইকবাল হোসেন বলেন, আলম আগে বিভিন্ন সময়ে যৌতুক দাবি করে আকলিমার ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন। আকলিমা আক্তার মৃত্যুর আগে একটি চিরকুট লিখে গেছেন বলে তাকে জানানো হয়। তবে চিরকুটটি আকলিমার লেখা নয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র উপ-পরিদর্শক মো. হারুন বাংলানিউজকে বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তদন্তের প্রয়োজনে উভয় পক্ষের সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণের কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এখনই বলা যাচ্ছে না, যে এটি আত্মহত্যা নাকি হত্যা।
হত্যার অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেন মৃত আকলিমার স্বামী মো. আলম। তিনি বলেন, সে আত্মহত্যা করেছে। মৃত্যুর আগে সে দুটি চিরকুট লিখে গেছেন। আমার স্ত্রীকে আমি কেন হত্যা করবো? এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ইকবালকে তার খালাতো ভাই রাজিব মোবাইল ফোনে জানান তার বোন আকলিমা আক্তার মারা গেছেন। এরপর ইকবাল বোনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে আঁখি (ছেলের বউ) জানান যে, তার শাশুড়ি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
পরদিন ভাগিনা আবিদের কাছে ঘটনা জানতে চাইলে তিনি জানায়, তার মা বাথরুমের সাওয়ারের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এরপর বিকেল সাড়ে চারটার সময় বাথরুমের দরজা ভেঙে মরদেহ বের করা হয় বলেও জানায় ভাগিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৮
এসজেএ/এমজেএফ